পাতা:য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাসঙ্গিক সংকলন

হয় ইংলন্‌ডে থাকতে থাকতে পেতেও পারি। মনে রেখো মঙ্গলবার দিন বিলেতে চিঠি পাঠাবার দিন। বাচ্ছাদের আমার হয়ে অনেক হামি দিয়ো··· ···

‘শ্যাম’। শুক্রবার [২৯ অগস্ট্ ১৮৯০]

পরশু তােমাকে একটা চিঠি পাঠিয়েছি— আজ আবার আর-একটা লিখছি— বােধ হয় এ দুটো চিঠি এক দিনেই পাবে— তাতে ক্ষতি কী? কাল আমরা ডাঙায় পৌঁছব তাই আজ তােমাকে লিখে রাখছি। আবার সেই ইংলন্‌ডে পৌঁছে তােমাদের লেখবার সময় পাব। যদি যাতায়াতের গােলমালে এর পরের হপ্তায় চিঠি ফাঁক যায় তা হলে কিছু মনে কোরাে না। জাহাজে চিঠি লেখা বিশেষ শক্ত নয়—কিন্তু ডাঙায় উঠে যখন ঘুরে বেড়াব, কখন্ কোথায় থাকব তার ঠিকানা নেই, তখন দুই-একটা চিঠি বাদ যেতেও পারে। আমরা ধরতে গেলে পরশু থেকে য়ুরােপে পৌঁচেছি। মাঝে মাঝে দূর থেকে য়ুরোপের ডাঙা দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের জাহাজটা এখন ডান দিকে গ্রীস আর বাঁ দিকে একটা দ্বীপের মাঝখান দিয়ে চলেছে। দ্বীপটা খুব কাছে দেখাচ্ছে—কতকগুলাে পাহাড়, তার মাঝে মাঝে বাড়ি, এক জায়গায় খুব একটা মস্ত শহর— দূরবীন দিয়ে তার বাড়িগুলাে বেশ স্পষ্ট দেখতে পেলুম—সমুদ্রের ঠিক ধারেই নীল পাহাড়ের কোলের মধ্যে শাদা শহরটি বেশ দেখাচ্ছে। তােমার দেখতে ইচ্ছে করছে না ছুট্‌কি? তােমাকেও একদিন এই পথ দিয়ে আসতে হবে তা জানাে? তা মনে করে তােমার খুশি হয় না? যা কখনাে স্বপ্নেও মনে কর নি সেই সময় দেখতে পাবে। দুদিন থেকে বেশ একটু ঠাণ্ডা পড়ে

২৫১