বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3 e রবি-দীপিতা যে, প্রকৃতি ও মকুন্তজীবনের অনেকগুলি সার সত্য যেমন র্তাহার অনুভূতির মধ্যেই ধরা পড়িয়া রসোজ্জল হইয়া জ্যোতিৰ্ম্ময় হইয়া উঠিয়াছে, মনুষ্যজীবনের এই পরমসত্যটিও তেমনি তাহার আগামীস্তরের অনুভূতিতে হয়তো রসোজ্জল হইয়৷ দেদীপ্যমান হইবে। মানুষের প্রাপ্তি শুধু জীবনীশক্তির ক্রিয়াব্যাপারে নয়, শুধু কল্পলোকের লোকোত্তর বিহারে নয়, শুধু অজানার সন্ধানে দুঃখঝঞ্জার উপর বিজয় কেতন উডডীন করাতে নয়, তাহার শ্রেয়োবোধকে তাহার জীবনবোধের মধ্যে সার্থক করিয়া তোলাতেই তাহার যথার্থ লোকোত্তরত্ব। সেইজন্য রবীন্দ্রনাথ যদিও আমাদিগকে তাহার অজস্রদানে গৌরবময় করিয়া তুলিয়াছেন, তথাপি তাহাতে যেন কিছু বাকী রহিয়া গিয়াছে। আমরা তাহার ধৰ্ম্মকে উদেপ্ত করিয়া বলি,— “হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্ত কোথা অন্য কোনখানে”। কড়ি ও কোমল ও মানসীর যুগে কৰিব কাব্যজীবনের যে প্রাথমিক বিকাশ দেখা যায় তাহাতে কবি কেবলমাত্র ভোগের সম্পর্কে আসিয়া ভোগের মধ্যে তলাইয়া যাইতে যাইতে যেন অনুভব করিলেন যে, শুধু ভোগের মধ্যে তল্লাইয়া যাওয়ায় নিজেকে পূর্ণ করা যায় না, ভোগের তলা হইতে কোনও এক অতল, কোনও এক ভোগাতীত যেন সঙ্কেত করে “এহ বাহ আগে কহ আর'। আমার পূৰ্ব্বলিখিত একটা প্রবন্ধে আমি বলিয়াছি যে, রবীন্দ্রনাথের কাব্যজীবন কোনও Theory বা মতকে অবলম্বন করিয়া যাত্রা করে নাই । সৌন্দৰ্য্যপিপাস্থ, ভোগপিপাসু চিত্ত তার আপন স্বাভাবিক গতিতে প্রকৃতি ও মানুষকে যে চক্ষুতে দেখিয়াছে তাহা লইয়াই তাহার কাব্যজীবনের আরম্ভ, সেই ভোগই তাহার কাব্যে ভোগাতীতকে ফুটাইয়া তুলিয়াছিল। রবীন্দ্রনাথের মধ্যযুগের অনেক কবিতা ও গানের মধ্য দিয়া শ্রেয়োবোধের যে এই অঙ্গুলিসঙ্কেত তাহা স্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছে, কিন্তু প্রকৃতির সহিত ও মানুষের সহিত যে শাস্তিময় স্পন্দন তাহার কাব্য-জীবনকে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল, তাহ যখন নানা দ্বদের মধ্য দিয়া একটি নবীন জাগরণে র্তাহার চিত্তকে প্রবুদ্ধ করিয়া তুলিল, তাহারই একটি পূর্ণ পরিণতি