বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীথিক ভাদ্র, ১৩৪২ পদের সঙ্গে পদ মিলে হয় বাক্য । বাক্যের সঙ্গে বাক্য মিলে হয় মহাবাক্য । পদমাত্রেরই সাধারণ একটা আভিধানিক অর্থ আছে। পদের সঙ্গে পদ মিলিয়ে যখন বাক্য হয় এবং বাক্যের সঙ্গে বাক্য মিলিয়ে যখন মহাবাক্য হয় তখন সেই আভিধানিক অর্থ একত্ৰ হ’য়ে একটি অখণ্ড বাক্যার্থকে প্রকাশ করে। কবির শিল্পরচনার গুণে শব্দ ও অর্থ যখন তাদের সাধারণ আভিধানিক অর্থ বা তাৎপৰ্য্যকে অতিক্রম করে একটা নূতন রস আনন্দ বা আহলাদকে বিচ্ছুরিত করে তখনই তাকে বলা যায় সাহিত্য বা কাব্য। শব্দ যখন তাহার আভিধানিক অর্থকে অতিক্রম করে শব্দ সঞ্চয়ন ও শব্দ গ্রন্থনের আনুকূল্যে একটি অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দ রসকে ব্যঞ্জিত বা ধ্বনিত করে তখনই তাকে কাব্য বলা যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে নানা রসের মধ্য দিয়ে কবি কোন গভীর সত্যকে ধ্বনিত কোরে তোলেন । হয়ত বা রসের অভিব্যক্তির চেয়ে কবির বলবার কথাটি প্রধানভাবে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই জাতীয় কাব্যকে বস্তুর্ধ্বনিমূলক কাব্য বলে। যেখানে প্রধানতই রসঞ্চনি হয় সেখানে সমালোচনার বড় অবসর থাকে না কারণ যে রসটিকে কবি ধ্বনিত করেন সেটিকে র্তার বাক্যাবলী থেকেই পৃথক কোরে প্রকাশ করা যায় না। কবির শব্দ সঞ্চয়ন শব্দ গ্রন্থন ও অর্থের সঙ্গে শব্দের পারস্পরিক প্রতিস্পর্ধিতায় ষে রসটি সমুল্লয়িত হয়ে ওঠে তা সমালোচকের বিশেষণের অপেক্ষ রাখে না, কিন্তু যে সমস্ত কাব্যে বস্তুব্বনি প্রধান হয়ে ওঠে সেইনে সমালোচক তার বিশ্লেষণের দ্বারা ও ব্যাখ্যার দ্বারা কবিবাঞ্ছিত তাৎপৰ্যকে সুস্পষ্ট কোরে তুলতে পারেন। সেইখানেই সমালোচক পান তার সমালোচনার ক্ষেত্র । বীথিকার অনেকগুলি কবিতা প্রধানতঃ রসৰ্ব্বনিমূলক সেখানে সমালোচনার ক্ষেত্র সঙ্কীর্ণ।