বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৩২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ লেখা eം ി চলেছে বাহিরের ও অন্তরের মিলন। একই অন্তৰ্য্যামী পুরুষের দুইটি প্রকাশ এবং দুইরূপের মধ্য দিয়ে তার লীলা পরিস্ফুট হচ্ছে। দুইটি রূপই একই অন্তৰ্য্যামীর রূপ সেইজন্যে বাহিরের রূপ অন্তরের রূপের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়ে আপন সার্থকতা লাভ করে । অন্তরের রূপের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেতে গেলেই অন্তরের যে পৃথক সম্পত্তি, পৃথক দান, তাহার সহিত যুক্ত হেয়ে বাহিরের রূপটির একটি নূতন আবির্ভাব ঘটে। প্রকৃতি যা আমাদের দেয় আমরা প্রকৃতিকে শুধু তা ফিরিয়ে দিই নে, তাকে অনেক গুণে সুন্দর ও শোভন করে ফিরিয়ে দিই। বাহিরে যা ছিল চঞ্চল তা আমাদের মধ্যে এসে অন্ত:শিল্পের দ্বারা একটা চিরন্তনত্ব লাভ করে । বাহিরের যে ক্রিয়া-স্রোত চলেছে তা একটা স্তরে এসে আপনাকে জীবস্রোতরূপে পরিণত করে। নানা পশুপক্ষী পতঙ্গের মধ্য দিয়ে এই জীবস্রোত ছুটে চলেছে। কিন্তু সেখানে যতটুকু চেতনার আভাস আছে তা’তে কোনো স্বাধীন কর্তৃত্ব নাই। তাই সেখানকার প্রকাশ instinctএর দ্বার সীমাবদ্ধ। পার্থীর গলায় স্থর আছে সেই সুর বিভিন্ন পক্ষীর কণ্ঠে বিভিন্নরূপ । কিন্তু প্রত্যেকটি স্বরই প্রত্যেক পার্থীর কণ্ঠের দ্বারা সীমাবদ্ধ, তাতে ব্যক্তিত্ব নেই, কর্তৃত্ব নেই, শিল্প নেই। মানুষের মধ্যে এসেই চেতনার প্রকাশ শিল্পরূপে আপনার পরিচয় দিতে পারে। পাপীর গলায় মুর আছে কিন্তু মানুষ গান গায় । এই গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে মনুষ্যলোকের চেতনার একট। নূতন দান, একটা নূতন কর্তৃত্ব, একটা নূতন প্রকাশ আপনাকে ব্যক্ত কোরতে পারে, অথচ এই প্রকাশ কোনোরূপ জৈব প্রয়োজনের দ্বারা সীমাবদ্ধ বা নিয়ন্ত্রিত নয়। নিম্প্রয়োজনের আনন্দ থেকে এই স্বষ্টির উৎস উৎসারিত হয়। জৈব প্রয়োজনের সঙ্গে জড়িত আমাদের যে আমি আছে তাকে ছাড়িয়ে রয়েছে আমাদের মধ্যে একটি অতিরিক্ত আমি, একটি আনন্দরূপ আমি, সেই আমিরই স্বষ্টি প্রকাশ পায় শিল্পে ও সাহিত্যে । বাহিরের জগতের যে অন্তৰ্য্যামী নিরস্তর নানারূপ স্বষ্টির মধ্য দিয়ে আপনাকে প্রকাশ কোরে চলেছেন তারই মধ্যে চলেছে এই নিম্প্রয়োজনের আনন্দের স্বাক্ট, সেইজন্ত আমাদের এই অতিরিক্ত আমির সঙ্গে বাহিরের রূপকার আমি রয়েছে।