পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8 রবি-দীপিত রবীন্দ্রনাথ ‘আমার ধৰ্ম্ম এই প্রবন্ধে বলিয়াছেন যে, মানুষের ভিতরে যে সভ্যরূপ সেইটিই তার ধৰ্ম্ম । মানুষের ভিতরে তার আত্মস্বরূপে যে স্বজন-শক্তি আপনাকে প্রকাশ করিয়া তুলিতেছে, তাহী ক্রমশঃ আপনাকে ফুটাইয়া তুলিতেছে। সেইজন্য তাহার ধৰ্ম্মও এই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তার আপন স্বভাবকে প্রকাশ করিয়া তুলিতেছে। মানুষ একটি বস্তুভূত জড়পদার্থ নয়। সেইজন্য কোন স্থিতিশীল গুণের দ্বারা তাহার পরিচয় প্রকাশ করা ষায় না । সে প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছেন যে, তাহার জীবনের প্রভাতকাল হইতে আরম্ভ করিয়া তাহার মধ্যে যে সৃষ্টি প্রক্রিয়া চলিয়াছিল তাঙ্গ বিশেষ বিশেষরূপে তাহার বিভিন্নকালের কাব্যরচনার মধ্য দিয়া প্রতিবিম্বিত হইয়াছে । তাহার জীবন শেষ হয় নাই। তাই তণতার ধৰ্ম্মও শেষ হয় নাই। তাহার মতে ধৰ্ম্ম কোন একটা মত বা কোন একটা বিশ্বাস নয়, ধৰ্ম্ম হইল গতিশীল অস্ত:স্বরূপের আপন সৃষ্টি প্রক্রিয়ার স্বভাব। তাহাকে সেই অন্তরের ক্রিয়াস্বরূপ হইতে পৃথক করিয়া ধরা ষায় না। রবীন্দ্রনাথের এই ধৰ্ম্মের ও তাহার অন্তররূপের যে নানা ছবি ‘বলাকা’র কবিতাগুলির মধ্য দিয়া প্রতিবিম্বিত হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছে, তাহা পরম্পরাক্রমে সাজাইয় তাহার মূৰ্ত্তি পরিকল্পনা করিবার একটা চেষ্টা এতক্ষণ করিয়াছি, তাহার মুখ্য তাৎপৰ্য্য এই যে, এক অখণ্ডসত্যস্বরূপ তাহার বস্তুহীন নিরাকার অমূৰ্ত্ত স্বজনীশক্তি দ্বারা আপনাকে উপলব্ধি করিতে চেষ্টা করিতেছেন, সেই চেষ্টার ফলে একদিকে হইয়াছে জড়জগং, সাধারণ জীবজগৎ ও অপরদিকে হইয়াছে, মানুষ ! সমস্ত জীবনীশক্তির লীল মানুষের মধ্যে আসিয়া প্রবুদ্ধ হইয়াছে। বিশ্বসংসার মানুষের চেতনলোকের মধ্যে আসিয়া অর্থপূর্ণ হইয়া সার্থকতা লাভ করিয়াছে। মানুষ যাহা অস্তরের স্বজনীশক্তির মধ্যে অনবরতই অনুভব করে যে, সে যাহা পাইয়াছে, পাইতেছে, তাহার বাহিরে কোন এক অজান হইতে যেন কি আহবান আসিতেছে এবং সেই আহবানের প্রেরণায় সে আপনাকে নিরস্তর গতিভঙ্গীর মধ্য দিয়া অগ্রসর করাইয়া চলিতেছে। বাধা ন হইলে গতি হয় না, সেইজন্য গতির মুখেই আসে বাধা এবং এই বাধাকে