পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\\ মুকুট $XX রাজধর। অন্ত কুমারদের কথা বলতে চাই নে, কিন্তু— ইশা খা । চুপ করো বৎস। আমি তোমার পিতার সঙ্গে কথা কছি। মহারাজ, মাপ করবেন, রাজবংশের এই কনিষ্ঠ পুত্রটি বড়ো হলে মুনশীর মতো কলম চালাতে পারবে কিন্তু তলোয়ার এর হাতে শোভা পাবে না । ( যুবরাজ এবং ইজকুমারকে দেখাইয়া ) চেয়ে দেখুন মহারাজ, এরাই তো রাজপুত্র, রাজগৃহ আলো করে अप्टिक्लन् । O মহারাজ। রাজধর, ঐ সাহেব কী বলছেন! তুমি অস্ত্রশিক্ষায় ওঁকে সন্তুষ্ট করতে পার নি ? রাজধর । সে আমার ভাগ্যের দোষ, অস্ত্রশিক্ষার দোষ নয়। মহারাজ নিজে আমাদের ধন্থবিদ্যার পরীক্ষা গ্রহণ করুন এই আমার প্রার্থনা। মহারাজ। আচ্ছা উত্তম । কাল আমাদের অবসর আছে, কালই পরীক্ষা হবে। তোমাদের মধ্যে যে জিতবে তাকে আমার এই হীরেবাধানো তলোয়ার পুরস্কার দেব | [ প্রস্থান ইশা খা । শাবাশ রাজধর, শাবাশ । আজ তুমি ক্ষত্ৰিয়সস্তানের মতো কথা বলেছ। অস্ত্রপরীক্ষায় যদি তুমি হার তাতেও তোমার গৌরব নষ্ট হবে না—হারজিত তো আল্লার ইচ্ছ, কিন্তু ক্ষত্রিয়ের মনে স্পর্ধা থাকা চাই । রাজধর । থাক্ সেনাপতি, তোমার বাহবা অন্ত রাজকুমারদের জন্ত জমা থাকৃ ; এতদিন তা না পেয়েও যদি চলে গিয়ে থাকে তবে আজও আমার কাজ নেই । যুবরাজ। রাগ ক’রে না তাই রাজধর । সেনাপতি সাহেবের সরল ভংগনা ওঁর সাদা দাড়ির মতে সমস্তই কেবল ওঁর মুখে । কোনো একটি গুণ দেখলেই তৎক্ষণাং উনি সব ভুলে যান। অস্ত্রপরীক্ষায় যদি তোমার জিত হয় তাহলে দেখবে, থ সাহেব তোমাকে যেমন মনের সঙ্গে পুরস্কৃত করবেন এমন আর কেউ নয় । রাজধর। দাদা, আজ পূর্ণিমা আছে, আজ রাত্রে যখন গোমতী নদীতে বাঘে জল খেতে আসবে তখন শিকার করতে গেলে হয় না ? যুবরাজ। বেশ কথা । তোমার যদি ইচ্ছে হয়ে থাকে তো যাওয়া যাবে। ইজকুমার। কী আশ্চর্য । রাজধরের যে শিকারে প্রবৃত্তি হল। এমন তো কখনো দেখা যায় নি । ইশা খা। ওঁর আবার শিকারে প্রবৃত্তি নেই! উনি সকলের চেয়ে বড়ো জীব শিকার করে বেড়ান। রাজসভায় দুই-পা-ওয়ালা এমন একটি জীব নেই যিনি ওঁর কোনো না কোনো ফাদে আটকা না পড়েছেন।