পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৩ রবীন্দ্র-রচনাবলী তৃতীয় দৃশ্য পরীক্ষাভূমি। রাজা, রাজকুমারগণ, ইশা খা, নিশানধারী ও ভাট ইন্দ্রকুমার। দাদা, আজ তোমাকে জিততেই হবে, নইলে চলবে না । যুবরাজ । চলবে না তো কী। আমার তীরটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও জগৎসংসার যেমন চলছিল ঠিক তেমনিই চলবে। আর, যদিবা নাই চলত তবু আমার জেতবার কোনো সম্ভাবনা দেখছি নে । ইন্দ্রকুমার। দাদা, তুমি যদি হার তবে আমি ইচ্ছাপূর্বক লক্ষ্যভ্রষ্ট হব। যুবরাজ । না ভাই, ছেলেমামুষি ক’রো না । ওস্তাদের নাম রাখতে হবে। ইশা খ। যুবরাজ, সময় হয়েছে—ধমুক গ্রহণ করে। মনোযোগ ক’রো। দেখো হাত ঠিক থাকে যেন । { যুবরাজের তীর নিক্ষেপ ইশ। খা । ষা: ফসকে গেল । যুবরাজ। মনোযোগ করেছিলুম ঐ সাহেব, তীরযোগ করতেই পারলুম না। ইন্দ্রকুমার। কখনো না । মন দিলে তুমি নিশ্চয়ই পারতে । দাদ, তুমি কেবল উদাসীন হয়ে সব জিনিস ঠেলে ফেলে দাও, এতে আমার ভারি কষ্ট হয় । ইশা খা । তোমার দাদার বুদ্ধি তীরের মুখে কেন পেলে না, তা জান ? বুদ্ধিটা তেমন স্বাক্ষ নয় । ইন্দ্রকুমার। সেনাপতি সাহেব, তুমি অঙ্গায় বলছ । ইশ,খ। ( রাজধরের প্রতি ) কুমার, এবার তুমি লক্ষ্য ভেদ করো, মহারাজ দেখুন। রাজধর । আগে দাদার হ’ক । ইশ থ। । এখন উত্তর করবার সময় নয়, আমার আদেশ পালন করে । রাজধরের তীর নিক্ষেপ ইশা খ। যাক, তোমার তীরও তোমার দাদার তীরেরই অনুসরণ করেছে— লক্ষ্যের দিকে লক্ষ্যও করে নি । যুবরাজ। ভাই, তোমার বাণ অনেকট নিকট দিয়েই গেছে, আর একটু হলেই লক্ষ্য বিদ্ধ করতে পারত। রাজধর । লক্ষ্য বিদ্ধ তো হয়েছে। দূর থেকে তোমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে না। ওই যে বিদ্ধ হয়েছে।