পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে-বাইরে 360 আমার স্বামী আমাকে জোয় করে কেন নিয়ে গেলেন না ? আমি জানি কেন । র্তার জোর আছে বলেই জোর করেন নি । তিনি আমাকে বরাবর বলে এসেছেন, স্ত্রী বলেই যে তুমি জামাকে কেবলই মেনে চলবে তোমার উপর আমার এ দৌরাত্ম্য আমার নিজেরই সইবে না। আমি অপেক্ষা করে থাকব আমার সঙ্গে যদি তোমার মেলে তো ভালো, যদি না মেলে তো উপায় কী ? কিন্তু তেজ বলে একটা জিনিস আছে—সেদিন আমার মনে হয়েছিল ওই জায়গায় আমি যেন আমার—ন, এ-কথা আর মুখে আনাও চলবে না। রাত্রের সঙ্গে দিনের যে তফাত সেটাকে যদি ঠিক হিসাবমতো ক্রমে ক্রমে ঘোচাতে হত তাহলে সে কি কোনো যুগে ঘূচত ? কিন্তু স্বর্ধ উঠে পড়ে, অন্ধকার চুকে যায়, অসীম কালের হিসাব মুহুর্তকালে মেটে । বাংলা দেশে একদিন স্বদেশীর যুগ এসেছিল—কিন্তু সে যে কেমন করে তা স্পষ্ট বোঝা যায়, না । তার আগেকার সঙ্গে এ-যুগের মাঝখানকার ক্রম যেন নেই। বোধ করি সেই জন্তেই নূতন যুগ একেবারে বাধ-ভাঙা বস্তার মতো আমাদের ভয়ভাবনা চোখের পলকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল । কী হল কী হবে তা বোঝবার সয়ম পাই নি । ஒ পাড়ায় বর আসছে, তার বঁশি বাজছে, তার আলো দেখা দিয়েছে, অমনি মেয়েরা যেমন ছাতে বারান্দায় জানলায় ৰেরিয়ে পড়ে, তাদের আবরণের দিকে আর মন থাকে না, তেমনি সেদিন সমস্ত দেশের বর আসবার বঁাশি যেমনি শোনা গেল মেয়েরা কি আর ঘরের কাজ নিয়ে চুপ করে বসে থাকতে পারে ? হুলু দিতে দিতে শাক বাজাতে বাজাতে, তারা যেখানে দরজা জানলা দেয়ালের ফাক পেলে সেইখানেই মুখ বাড়িয়ে দিলে। সেদিন আমারও দৃষ্টি এবং চিত্ত, আশা এবং ইচ্ছা উন্মত্ত নবযুগের জাবিরে লাল হয়ে উঠেছিল। এতদিন মন যে-জগৎটাকে একান্ত বলে জেনেছিল এবং জীবনের ধৰ্মকৰ্ম আকাঙ্ক্ষা ও সাধনা যে-সীমাটুকুর মধ্যে বেশ গুছিয়ে সাজিয়ে স্বন্দর করে তোলবার কাজে প্রতিদিন লেগেছিল, সেদিনও তার বেড়া ভাঙে নি বটে কিন্তু সেই বেড়ার উপরে দাড়িয়ে হঠাৎ যে একটি দূরদিগন্ধের ভাক গুনলুম স্পষ্ট তার মানে বুঝতে পারলুম না কিন্তু মন উতলা হয়ে গেল। আমার স্বামী যখন কলেজে পড়তেন তখন খেৰেই তিনি দেশের প্রয়োজনের e جسے by