8eb- রবীন্দ্র-রচনাবলী আমার কথাটি ফুরালো । ইংরেজি ছন্দকে আমি বাংলা ছন্দের রীতি-অনুসারে ভাগ করিয়া দেখিয়াছি, সেটা ভালো হইল কি না জানি না । ইংরেজি ছন্দতত্ত্ব আমার একদম জানা নাই বলিয়াই বোধ করি এরূপ দুঃসাহস আমার পক্ষে সহজ হইয়াছে । কারণ, চাণক্য যাহাদিগকে কথা কহিতে বারণ করেন তাহারাই আগেভাগে কথা কহিয়া বসে ; আপনারাও জানেন angelরা প্রবেশ করিতে ভয় পান এমন জায়গা আছে, কিন্তু foolদের কোথাও বাধা নাই । এরূপ সতর্কতায় সকল সময়েই যে এঞ্জেলরা জেতেন তাহা নহে, অনেক সময়েই ঠকিয়া থাকেন ; অবুঝ হঠকারিতায় অপর পক্ষের কখনো কখনো জিত হইবার সম্ভাবনা আছে, এই আমার ভরসা। আপনার পক্ষে বোঝা সহজ হইতে পারে বলিয়াই আমি ইংরেজি দৃষ্টাস্তগুলি ব্যবহার করিয়াছি, ইহাতে আমার বিদ্যা প্রকাশ না হইয়া বিদ্যা ফাস হুইয়া যাইতে পারে । ১৮ আষাঢ় ১৩২১ ঐ প্রমথ চৌধুরীকে লিখিত চলতি কথায় একটা লম্বা ছন্দের কবিতা লিখেছি। এটা কি পড়া যায় কিম্বা বোঝা যায় কিম্বা ছাপানো যেতে পারে। নাম-রূপের মধ্যে রূপটা আমি দিলুম, নাম দিতে হয় তুমি দিয়ো . যারা আমার সাব-সকালের গানের দীপে জালিয়ে দিলে আলো আপন হিয়ার পরশ দিয়ে, এই জীবনের সকল সাদা-কালো যাদের আলো-ছায়ার লীলা, বাইরে বেড়ায় মনের মানুষ যারা তাদের প্রাণের ঝরনাস্রোতে আমার পরান হয়ে হাজার ধারা চলছে বয়ে চতুর্দিকে । কালের যোগে নয় তো মোদের আয়ুনয় সে কেবল দিবস-রতির সাতনলি হার, নয় সে নিশাসবায়ু। নানান প্রাণের প্রেমের মিলে নিবিড় হয়ে আত্মীরে বান্ধবে মোদের পরমায়ুর পাত্র গভীর ক’রে পূরণ করে সবে। সবার বাচায় আমার বাচ আপন সীমা ছাড়ায় বহুদূরে, নিমেষগুলির ফল পেকে যায় বিচিত্র আনন্দরসে পুরে , অতীত হয়ে তবুও তারা বর্তমানের বৃস্তদোলায় দোলে— গর্ত হতে মুক্ত শিশু তবুও যেমন মায়ের বক্ষে কোলে বন্দী থাকে নিবিড় প্রেমের বাধন দিয়ে । তাই তো যখন শেষে একে একে আপন জনে স্বৰ্ধ-আলোর অন্তরালের দেশে