পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ ૨૨૧ তা ভাই, দুর্গ নিজের বর খুজতে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে তপস্ত করেছিলেন, কিন্তু নাখনীদের বর জুটছে না বলে আমি বুড়োমাহূব খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেব, বড়োমার এ কী বিচার । আহা শৈল, ওটা মনে আছে তো – তদপ্যপাকীর্ণমতঃ প্রিয়ংবদাং— শৈল । মনে আছে দাদা, কিন্তু কালিদাস এখন ভালো লাগছে না। রসিক। তা হলে তো অত্যন্ত দুঃসময় বলতে হবে। শৈল। তাই তোমার সঙ্গে পরামর্শ আছে। রসিক। তা, রাজি আছি ভাই । ষে-রকম পরামর্শ চাও, তাই দেব। যদি “হা” বলাতে চাও “ই৷” বলব, “না” বলাতে চাও না” বলব। আমার ওই গুণটি আছে । আমি সকলের মতের সঙ্গে মত দিয়ে যাই বলেই সবাই আমাকে প্রায় নিজের মতোই বুদ্ধিমান ভাবে । অক্ষয় । তুমি অনেক কৌশলে তোমার পসার বঁচিয়ে রেখেছ, তার মধ্যে তোমার এই টাক একটি । রসিক। আর একটি হচ্ছে— যাবং কিঞ্চিম ভাবতে। তা, আমি বাইরের লোকের কাছে বেশি কথা কইনে— শৈল। সেইটে বুঝি আমাদের কাছে পুষিয়ে নাও । রসিক । তোদের কাছে যে ধরা পড়েছি। শৈল । ধরা যদি পড়ে থাক তো চলো— যা বলি তাই করতে হবে। বলিয়া পরামর্শের জন্য শৈল তাহাকে অন্ত ঘরে টানিয়া লইয়া চলিল । অক্ষয় বলিতে লাগিল, “জ্য, শৈল! এই বুঝি ! আজ রসিকদা হলেন রাজমন্ত্রী। আমাকে ফাকি !” শৈল যাইতে যাইতে পশ্চাং ফিরিয়া হাসিয়া কহিল, “তোমার সঙ্গে আমার কি পরামর্শের সম্পর্ক মুখুজোমশায় ? পরামর্শ ষে বুড়ে না হলে হয় না।” অক্ষয় বলিল, “তবে রাজমন্ত্রী-পদের জন্তে আমার দরবার উঠিয়ে নিলুম।" বলিয়া শূন্ত ঘরের মধ্যে দাড়াইয়া হঠাৎ উচ্চৈঃস্বরে খাম্বাজে গান ধরিলেন— আমি কেবল ফুল জোগাব তোমার দুটি রাঙা হাতে, বুদ্ধি আমার খেলে নাকে : পাহারা বা মন্ত্ৰণাতে । , , বাড়ির কর্তা খন ৰাচিয়া ছিলেন তিনি রসিককে খুড়া বলতেন। রসিক দীর্ষ