পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

松o唱,... রবীন্দ্র-রচনাবলী যদি এই সুরটুকু না থাকত—যদি এই অত্যন্ত প্রয়োজনের ভিতরেই অত্যন্ত অপ্রয়োজন বাস না করত তাহলে কি আমরা বাঁচতে পারতুম। প্রয়োজন যদি সত্যই একান্ত হত তাহলে তার ভয়ংকর চাপ কে সহ করতে পারত। অত্যন্ত অপ্রয়োজনের দিন ও রাত্রি এই অত্যন্ত প্রয়োজনের ভার হরণ করে রয়েছে বলেই আমরা দরকারের অতি প্রবল মাধ্যাকর্ষণের মধ্যেও চলাফেরা করে বেড়াতে পারছি। সেইজন্তেই ভোরের আলো দেখা দেবামাত্রই রাণীকৃত বোঝা যেখানে-সেখানে যেমন-তেমন করে ফেলে রেখে আমরা গাড়িতে চড়ে বসতে পারছি । “কিছুই থাকে না” বলে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলছি—তেমনি “কিছুই নড়ে না” বলে হতাশ হয়ে পড়ছি নে। থাকছেও বটে যাচ্ছেও বটে, এই দুইয়ের মাঝখানে আমরা ফাকও পেয়েছি আশ্রয়ও পেয়েছি— আমাদের ঘরও জুটেছে আলোবাতাসও মারা যায় নি। ৮ পৌষ উৎসব-শেষ আমরা অনেক সময় উৎসব করে ফতুর হয়ে যাই । ঋণশোধ করতেই দিন বয়ে যায় । অল্পসম্বল ব্যক্তি যদি একদিনের জন্তে রাজা হওয়ার শখ মেটাতে যায় তবে তার দশদিনকে সে দেউলে করে দেয়, আর তো কোনো উপায় নেই। সেইজন্যে উৎসবের পরদিন আমাদের কাছে বড়ো মান । সেদিন আকাশের আলোর উজ্জ্বলতা চলে যায়—সেদিন অবসাদে হৃদয় ভারাক্রাস্ত হয়ে পড়ে । কিন্তু উপায় নেই। মানুষ বংসরে অন্তত একটা দিন নিজের কার্পণ্য দূর করে তবে সেই অকৃপণের সঙ্গে আদানপ্রদানের সম্বন্ধ স্থাপন করতে চায়। ঐশ্বর্ষের দ্বারা সেই ঈশ্বরকে উপলব্ধি করে । Ç দুই রকমের উপলব্ধি আছে। এক রকম—দরিদ্র যেমন ধনীকে উপলব্ধি করে, দানপ্রাপ্তির দ্বারা । এই উপলব্ধিতে পার্থক্যটাকেই বেশি করে বোঝা যায়। আরএক রকম উপলব্ধি হচ্ছে সমকক্ষতার উপলব্ধি। সেই স্থলে আমাকে স্বারের বাইরে বসে থাকতে হয় না—কতকটা এক জাজিমে বসা চলে । բ প্রতিদিন যখন আমরা দীনভাবে থাকি তখন নিরানন্দ চিত্তটা আনন্দময়ের কাছে ভিক্ষুকতা করে। উংসবের দিনে সেও বলতে চায়, আজ কেবল নেওয়া নয় আজ আমিও তোমার মতো আনন্দ করব—আজ আমার ীিনতা নেই কৃপণতা নেই, আজ আমার আনন্দ এবং আমার ত্যাগ তোমারই মতে অজস্ৰ ।