পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় b SS লর্ড কার্জনের আমলে য়ুনিভার্সিটি “সংস্কার করিবার জন্য যে য়ুনিভার্সিটি বিল উপস্থাপিত হয়, যাহার উদ্দেশ্য ছিল উচ্চশিক্ষার প্রসার সংকুচিত ও ব্যয়সাধ্য করা, দেশের প্রতিবাদসত্ত্বেও তাহা পাস হইবার পর “য়ুনিভার্সিটি বিল প্ৰবন্ধটি বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত হয় । সেই প্রবন্ধের উপক্ৰমণিকায় রবীন্দ্ৰনাথ বলিলেন য়ুনিভার্সিটি বিল পাস হইয়া গেছে, আমরাও নিস্তব্ধ হইয়াছি। যতক্ষণ পাস হয় নাই। ততক্ষণ আমরা এমন ভাব ধারণ করিয়াছিলাম যেন আমাদের মহা অনৰ্থপাতের সম্ভাবনা ঘটিয়াছে । যদি বস্তুতই আমাদের সেইরূপ বিশ্বাসই হয়, তবে বিল পাশ হইয়া গেল বলিয়াই আমনি সুনিদ্রার আয়োজন করিতে হইবে, ইহার হেতু খুঁজিয়া পাওয়া যায় না । দেশের সত্যই যদি কোনো দারুণ অনিষ্ট ঘটিবার কারণ থাকে, তবে গবমেন্ট আমাদের দোহাই মানিলেন না বলিয়াই আমরা নিজেরাও যথাসাধ্য প্ৰতিকার-চেষ্টা করিব না, ইহার অর্থ কী । আন্দোলনসভায় আমরা যে পরিমাণে সুর চড়াইয়া কঁদিয়াছিলাম, রঙ ফলাইয়া ভাবী বিষয় নহে ? বেদনা। যদি অকপট হয়, শঙ্কা যদি ভান না হয়, তবে আজ আমরা চুপচাপ করিয়া বসিয়া নিজের দুই গালে চুনকালি লেপিতেছি । —বঙ্গদর্শন । আষাঢ় ১৩১১, পৃ. ১৪৫ রবীন্দ্ৰনাথ প্ৰস্তাব করিলেন, নিজেদের বিদ্যাদানের ভার নিজেরা গ্ৰহণ করিতে হইবে বসিয়া বসিয়া আক্ষেপ করিলে চলিবে না । আমরা নিজেরা যাহা করিতে পারি। তাহারই জনা আমাদিগকে কোমর বাধিতে হইবে ।-- বিশেষ প্রয়োজন হইয়াছে— নিজেদের বিদ্যাদানের ব্যবস্থাভার নিজেরা গ্রহণ করা । তাহাতে আমাদের বিদ্যামন্দিরে কেমব্ৰিজ-অকসফোর্ডের প্রকাণ্ড পাষাণপ্রতিরূপ প্রতিষ্ঠিত হইবে না জানি, তাহার সাজ-সরঞ্জাম দরিদ্রের উপযুক্ত হইবে।--কিন্তু জাগ্রত সরস্বতী শ্রদ্ধাশতদলে আসীন হইবেন, তিনি জননীর মতো করিয়া সন্তানদিগকে অমৃত পরিবেষণা করিবেন, ধনমদগর্বিতা বণিক গৃহিণীর মতো উচ্চ বাতায়নে দাড়াইয়া দূর হইতে ভিক্ষুকবিদায় করিবেন না । —বঙ্গদর্শন । চৈত্র ১৩১১, পৃ. ১৪৮ ് ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষ ১৩১২ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয় । ‘এই গ্রন্থের সমস্ত প্ৰবন্ধই বঙ্গদর্শনে (নব পর্যায়) প্ৰকাশিত হইয়াছিল ।” আত্মশক্তি ও ভারতবর্ষ দুইখানি গ্ৰন্থই ১৩১২ সালে প্ৰকাশিত হইলেও, এবং আখ্যাপত্রে কোন মাস তাহার নির্দেশ না থাকিলেও বঙ্গদর্শনের বিজ্ঞাপন হইতে জানা যায় যে, গ্রন্থাকারে এই গ্রন্থ পরে আর প্রচলিত ছিল না, অধিকাংশ প্ৰবন্ধ অল্পবিস্তর পরিবর্তিত রূপে গদ্যগ্রন্থাবলীর অন্তৰ্গত বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হইয়াছিল— ‘নববর্ষ “ভারতবর্ষের ইতিহাস রাজাপ্ৰজা গ্রন্থে, ‘মন্দিরের কথা’ বিচিত্ৰ প্ৰবন্ধে এবং ‘’ধম্মপদং’ প্ৰাচীন সাহিত্যে । চীনেম্যানের চিঠি’ প্ৰবন্ধটির প্রথমাংশ বর্জন করিয়া শেষাংশ ‘ব্রাহ্মণ' প্ৰবন্ধের সহিত যুক্ত করিয়া দেওয়া হয় । ‘চীনেম্যানের চিঠি’র প্রসঙ্গে প্রচলিত পথের সঞ্চয় গ্রন্থে সংকলিত ‘ইংলন্ডের ভাবুকসমাজ” প্ৰবন্ধের অংশবিশেষ দ্রষ্টব্য - কেমব্রিজের কলেজ-ভবনে একজন অধ্যাপকের বাড়িতে নিমন্ত্রিত হইয়া আমি দিন দুয়েক বাস করিয়াছিলাম। ইহার নাম লোয়েস ডিকিন্সন । ইনিই “জন চীনাম্যানের পত্র বইখানির