পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌ Ꮌ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী দস্তে দন্তে গেল অঁাটি । বৈষ্ঠ শির নাড়ি ধীরে ধীরে চলি গেল রোগীগৃহ ছাড়ি । সন্ধ্যার আঁধারে শূন্ত বিধবার ঘরে একটি মলিন দীপ, শয়নশিয়রে এক শোকাতুরা নারী। শিশু একবার জ্যোতিহীন আঁখি মেলি যেন চারি ধার খুজিল কাহারে । নারী কঁাদিল কাতর, 'ও মানিক, ওরে সোনা, এই-যে মা তোর, এই-যে মায়ের কোল, ভয় কী রে বাপ !’ বক্ষে তারে চাপি ধরি তার জরতাপ চাহিল কাড়িয়া নিতে অঙ্গে আপনার প্রাণপণে সহসা বাতাসে গৃহদ্বার খুলে গেল, ক্ষীণ দীপ নিবিল তখনি— সহসা বাহির হতে কলকলধ্বনি পশিল গৃহের মাঝে । চমকিল নারী । দাড়ায়ে উঠিল বেগে শয্যাতল ছাড়ি, কহিল, ‘মায়ের ডাক ওই শুনা যায়— ও মোর দুঃখীর ধন, পেয়েছি উপায়, তোর মার কোল চেয়ে সুশীতল কোল আছে ওরে বাছ ? * জাগিয়াছে কলরোল অদূরে জাহ্নবীজলে, এসেছে জোয়ার পূর্ণিমায় । শিশুর তাপিত দেহভার বক্ষে লয়ে মাতা গেল শূন্তঘাট-পানে । কহিল, ‘মা, মার ব্যথা যদি বাজে প্রাণে তবে এ শিশুর তাপ দে গে৷ মা, জুড়ায়ে। একমাত্র ধন মোর দিচু তোর পায়ে এক-মনে ? এত বলি সমৰ্পিল জলে অচেতন শিশুটিরে লয়ে করতলে চক্ষু মুদি। বহুক্ষণ আঁখি মেলিল না ;