বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজনারায়ণ বসুর আত্মচরিত.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৰ্ম্মজীবন । Σ ΣΟζ ক্রমে তাহার হাত এড়াইয়া তাহাকে নমস্কার পূর্বক গাড়ীতে ঢুকিলাম। পথে আবার একদিন অবস্থিতি করিয়া এলাহাবাদ যাই। এলাহাবাদে আমার হেয়ার সাহেবের স্কুলের সমাধ্যায়ী পুরাতন বন্ধু বাবু নীলকমল মিত্রের বাটীতে অবস্থিতি করি। তথায় তাহার পুত্র সপ্তদশবৰ্ষীয় যুবক । চারুচন্দ্ৰ মিত্র আমার যথেষ্ট শুশ্রুষা করেন । ইনি নামেও চারু কৰ্ত্তব্যেও চারু। কেবল শারীরিক সৌন্দৰ্য্য জন্য ঐ নামের উপযুক্ত এমত নহে। তাহার ব্ৰাহ্মধৰ্ম্মের প্রতি প্রগাঢ় ভক্তি, সরলতা, সৌজন্য, ও অতিথিসেবা জন্য ঐ নামের উপযুক্ত ছিলেন। কলিকাতা থাকিতে প্ৰধান আচাৰ্য্য মহাশয়ের জামাতা জানকীনাথ ঘোষালের মুখে ইহার বিবিধ গুণের কথা শ্রবণ করিয়া ইহার প্রতি অসাধারণ স্নেহ ভাবের উদয় হয়। পিতৃ স্নেহের ন্যায় স্নেহ উদিত হয়। ইহার গুণেব কথা দেবেন্দ্ৰ বাবুকে লেখাতে তিনি লিখিয়াছিলেন “চারু যেমন দেখিতে চারু কৰ্ত্তব্যেও চারু।” নীলকমল বাবুর বাটীর নাম লালকুটী ছিল। লালকুটীতে অবস্থিতিকালে পাচটা বস্তু আমার মনোযোগ আকর্ষণ করে। প্ৰথম একটা প্ৰকাণ্ড কাকাতুয়া পাখী। এত বড় কাকাতুয়া পাখী কখন দেখি নাই। কাকাতুয়া মহারাজ সর্বদা রেগেই থাকিতেন। দ্বিতীয় একটী শীখ ভদ্রলোক। তিনি এলাহাবাদের কাটোয়াল ছিলেন। তিনি একটি বিপদে নীলকমল বাবুর প্রাণ বঁাচাইয়া দেওয়াতে র্তাহাকে নীলকমল বাবু তাহার কৰ্ম্মচুত অবস্থায় নিজ বাটীতে রাখিয়াছিলেন। তৃতীয় হরিবোল ব্ৰাহ্মণ। তিনি একটী নামাবলী গায় দিয়া সৰ্ব্বদা "হরি হরি বোল” “হরি হরিবোল” বলিয়া বেড়াইতেন। চতুর্থ একটী ঘর যাহাতে কতকগুলি ব্ৰাহ্ম জাওয়ানো থাকিত। পঞ্চম একটী ঘর যেখানে একটা হিন্দুস্থানী ব্ৰাহ্মণ শ্ৰীমদ্ভাগবত পাঠ করিতেন, নীলকমল বাবুর পরিবার তাহা শুনিতেন ।