পাতা:রাজনারায়ণ বসুর আত্মচরিত.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজনারায়ণ বসুর আত্ম-চরিত। سوO আহারের উদযোগ হইল। সাহেব ও রামগোপাল বাবু একত্রে আহার করিলেন, আমাদের বাঙ্গালীতার বন্দোবস্ত হইল। গৌড়ের জঙ্গলবাসী কতকগুলি লোক সেই স্থান দিয়া যাইতেছিল। তাহাদিগের নিকট হইতে আমরা মহিষের দুগ্ধ কিনিলাম এবং কয়জনে পড়িয়া খিচুড়ি রাধিলাম। ভোজন সমাধা করিয়া আমরা ভগ্নাবশেষ দর্শনে বহির্গত হইলাম। আমরা দেওয়ান-খানা নামক একটি ভগ্নাবশেষ দেখিলাম। এই খানে বাদসাহের প্রত্যহ দরবার হইত। প্রাচীরের উপরে অতীব সুক্ষ্ম কারুকাৰ্য্য দেখিলাম। সেই কারুকাৰ্য্যের মধ্যে কোরান হইতে উদ্ধৃত কয়েকটী আরবী বাক্য খোদিত দৃষ্ট হইল। আমি যেন আমার সম্মুখে দেখিতে পাইলাম যে, বাদসহ সিংহাসনে আসীন আছেন, আর উজীর ও অন্যান্য রাজকৰ্ম্মচারিগণ র্তাহাকে বেষ্টন করিয়া অবনতজানু হইয়া উপবিষ্ট আছেন, অনতিদূরে সুবিচারপ্রার্থ অসংখ্য মুসলমান ও হিন্দু দণ্ডায়মান রহিয়াছে। তৎপরে চটকা ভাঙ্গিয়া গেলে বোধ হইল যেন আমি স্বপ্ন দেখিতেছিলাম। মানুষ্যের কীৰ্ত্তি কি অস্থায়ী ! যে স্থান এরূপ জনতা ও লৌকিক কাৰ্য্যের ব্যস্ততার আধার ছিল, তাহা এক্ষণে বিজন ও ভয়ানক হিংস্ৰ জন্তুর আবাস হইয়াছে। তৎপরে আমরা প্ৰকাণ্ড প্ৰকাণ্ড কয়েকটি পুষ্করিণী দেখিলাম। সে সকল পুষ্করিণী এক একটি হ্রদের ন্যায়। তাহাতে বৃহৎ বৃহৎ কুমীর ভাসিতে দেখা গেল। এক স্থানে আমরা কলিকাতার অক্টারলনী মনুমেণ্টের ন্যায় একটি অত্যুচ্চ । স্তম্ভাকৃতি গৃহ দেখিলাম। শুনিলাম যে, তাহার উপর রাজ-জ্যোতিৰ্ব্বেত্তা রাত্রে উঠিয়া নক্ষত্ৰ পৰ্য্যবেক্ষণ করিতেন। আমার ক্ষণেকের জন্য স্বপ্নের ন্যায় বোধ হইল, যেন অন্যাপি রাত্রে উষ্ণীষধারী ও আপাদলম্বিত আলখাল্লা পরিহিত রাজ-জ্যোতিৰ্ব্বেত্ত নভোমণ্ডলে দূরবীক্ষণ নিয়োগ করতঃ নক্ষত্ৰপৰ্য্যবেক্ষণকাৰ্য্য সম্পাদন করিয়া থাকেন। এই--