বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ૧ ] নারীদিগের ইন্দ্রিয় চালনা না হইয়াছে, তাহারাই ধ্যানের অধিকারী ও অধিকারিণী। এই কথায় একটা প্রশ্ন হইতে পারে যে, র্যাহার। ইন্দ্রিয় চালনা না করেন, তাহারাই যদ্যপি ধ্যানের উপযুক্ত পাত্র পাত্রী হন, তাহা হইলে নপুংসকদিগকে সৰ্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ সাধক বলিয়া স্বীকার করাই কৰ্ত্তব্য। কিন্তু ইতিহাসে নপুংসক সাধকের কোন কথা শুনিতে পাওয়া যায় না। হিন্দুমতে নপুংসকেরা অপবিত্র বলিয়াই পরিগণিত। ভগবানের নিয়মে নর নারী সকল কতিপয় মানসিক বৃত্তি প্রাপ্ত হইয়া সংসারক্ষেত্রে বিচরণ করিয়া থাকে। একপক্ষে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য্য এবং অপর পক্ষে ক্ষমা, দয়া, দক্ষিণ্য ইত্যাদি বৃত্তি গুলির কার্য্যের দ্বারা মমুষ্যের আনন্দ লাভ করিয়া থাকে। কাম কাহাকে বলে ? কোন বস্তুর বিরহ হইলে যে নিরানন্দ ভোগ করা যায়, তাহ পূর্ণ করিবার স্পৃহাকে কাম বলে। কামের রূঢ় তাৎপৰ্য্য রমনেচ্ছাকেই নির্দেশ করিয়া থাকে ; রমন শব্দে মহাসুখকে বুঝায়। সংসারে যে সকল সুখদ বিষয় আছে, তন্মধ্যে রমণী সম্ভোগ মহাসুখ বলিয়া পরিগণিত। মহাসুখাস্বাদন স্পৃহা হওয়া কামবৃত্তির কার্য্য। যাহণদের ইন্দ্রিয়াদি শিথিল, অথবা নিষ্ক্রীয়, কিম্বা অভাব হইয়াছে, তাহাদের রমণ স্পৃহা কমিয়া যায় অথবা থাকে না । সুতরাং এ অবস্থায় একটি মানসিক বৃত্তি খৰ্ব্ব হইয়া থাকে। নপুংসকাদিরা সেই জন্য রক্তিবিশেষ হইতে বঞ্চিত হইয়া জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করে । যাহারা ঈশ্বর লাভ করিবেন, তাহাদের সকল বৃত্তিগুলিকে সহজ করিবার জন্য পূর্ণমনের প্রয়োজন হইয়া থাকে। রমণ কাৰ্য্যের দ্বারা যাহার কামবৃত্তি চরিতার্থ করিয়া লন, তাহাদের স্পৃহাশক্তি ক্রমে হীন হইয়া মানসিক শক্তি কমিয়া আইসে। সুতরাং সে স্থলে মনের আংশিক অভাব হইয় পড়ে।