পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ و یاد ] হিন্দুমতে আত্মা বিশ্বাস করিবার কথাও আছে, বিশ্বাস না করিবারও কথা আছে। একপক্ষে বলেন যে, কৰ্ম্মফলের দ্বারা আত্মার উন্নতি এবং অবনতি হইয়া থাকে। যিনি যেমন কৰ্ম্ম করেন, পরজন্মে তিনি তেমনি অবস্থা লাভ করিয়া থাকেন। এই নিমিত্ত কৰ্ম্মকাণ্ডের বহুল ব্যবস্থা আছে। জ্ঞানকাণ্ডের মতে বাহাজগৎ মায়াবিশেষ, সুতরাং তাহার কার্য্যকলাপ সমুদয় অলীক। যেমন যাদুকর সত্য এবং তাহার ক্রীড়া ভেল্কীবিশেষ । এক অদ্বিতীয় পরমাত্মাই সত্য, তিনি যাদুকরবিশেষ, ব্রহ্মাণ্ড তাহার রঙ্গস্থল। প্রত্যেক পদার্থ সেই পরমাত্মার পরিচয় ; আত্মা ও পরমাত্মা বলিয়া যে ভ্রম হয়, তাহ বাস্তবিক ভ্রমের কথা। এই নিমিত্ত জ্ঞানীরা সোহং বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকেন। এই মতের বিশ্বাসীরা যাহা বলেন, তাহ সাধক রামপ্রসাদের মৃত্যুকালীন গীতে প্রকাশ আছে । বল্‌ দেখি ভাই কি হয় ম’লে, এই বাদামুবাদ করে সকলে। কেউ বলে ভূত প্রেত হবি, কেউ বলে তুই স্বর্গে যাবি, কেউ বলে সালোক্য পাবি, কেউ বলে সাযুজ্য মেলে। বেদের আভাস তুই ঘটাকাশ ঘটের নাশকে মরণ বলে। শূন্যেতে পাপ পুণ্য মান্য গণ্য ক’রে সব খোয়ালে ৷ এক ঘরেতে বাস করি’ছ পঞ্চ জনে মিলে জুলে । সে যে সময় হ’লে আপনা আপনি যে যার স্থানে যাবে চলে। প্রসাদ বলে যা ছিলি ভাই, হবি রে তাই নিদানকালে। যেমন জলের বিস্ব, জলে উদয়, জলে হয় সে মিশায় জলে ॥ পরম সাধক রামপ্রসাদ মৃত্যুকালে দেহেরপরিণাম সম্বন্ধে যাহাবলিয়া গিয়াছেন, তাহা দ্বারা আত্মাবিবাদীদিগের মতই সমর্থন হইয়া থাকে ।