পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

있8 রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র যজমান গাহপত্য, আহবনীয় এবং দক্ষিণাগ্নি, এই তিন অগ্নিতে এক-একখানি সমিং ফেলিয়া যজ্ঞের জন্য অগ্নিকে অনুকূল করিয়া রাখেন। অগ্নিকে যেন বলিয়া রাখা হয়, কাল আমি যাগ করিব, এখন হইতে তুমি প্রস্তুত হইয়া থাক। অপরাহ্লে যজমান ক্ষৌরকার্য্যের পর স্বানান্তে কিছু থাইয়া লন ; পরে অগ্নির পাশে দাড়াইয়া, আমি সত্য কথা কহিব ইত্যাদি কতিপয় নিয়ম পালনের প্রতিজ্ঞ করেন । এই কৰ্ম্মের নাম ব্রত-গ্রহণ। পত্নীর সহিত যজমান অগ্নিশালাতেই শয়ন করিয়া রাত্রি যাপন করেন । পরদিন প্রাতে অগ্নিহোত্র সমাপনের পর ইষ্টিযাগ | যজমানের প্রথম কাজ ব্রহ্মার বরণ । বরণের পর ব্রহ্মা আহবনীয়ের দক্ষিণে আসন গ্রহণ করেন, এবং সেখানে বসিয়াই সৰ্ব্বকৰ্ম্ম পরিদর্শন করেন । ব্রহ্মার বাম দিকে যজমানের বসিবার স্থান । যজমানের পত্নী গাহপত্যের দক্ষিণে বসেন। তিনি ষখন গৃহিণী, তখন গাহপত্যের সহিত র্তাহার বিশেষ সম্বন্ধ। বেদির উত্তর দিকে হোতার এবং অগ্নিতের আসন । অধ্যযু ঘাগকালে বসিতে পান না ; তাহাকে নানা কৰ্ম্মে এখানে ওখানে ঘুরিতে হয়। বরণের পর ব্রহ্মা স্বস্থানে বসিলে প্রণীতা-প্রণয়ন কৰ্ম্ম হয়। প্র উপসর্গের অর্থ সম্মুখে— পূৰ্ব্বমুখে ; প্র-ণয়ন শব্দের অর্থ পূৰ্ব্বমুথে লইয়া যাওয়া। খানিকটা জল পূৰ্ব্বমুখে লইয়া আহবনীয়ের পাশ্বে স্থাপন করা হয়। আগে বলিয়াছি, বেদির পূর্ব দিকে আহবনীয়ের স্থান। এই জলের নাম প্রণীতা । সংস্কৃত ভাষায় অপ, শব্দ স্ত্রীলিঙ্গ, সেই জন্য প্রণীত বিশেষণটা স্ত্রীলিঙ্গে আকারাস্ত । যাগশেষ পর্য্যন্ত সেই জল সেইখানে থাকে। তাৎপৰ্য্য, উহা স্বস্থানে থাকিয় যজ্ঞকে রক্ষা করিবে । শতপথ ব্রাহ্মণ বলিতেছেন, জল আস্তর ও রাক্ষসগণের পক্ষে বজ্রস্বরূপ ; উহার সেই বজ্ৰ দেখিলে যজ্ঞভূমিতে আসে না । এদিকে অধ্বষু যজ্ঞের সরঞ্জামগুলি সংগ্ৰহ করিয়া গোছাইয়া রাখেন এবং যথাকালে বেদির উপর সাজাইয়া রাখেন । ঈষ্টিযাগে অনেকগুলি সরঞ্জামের দরকার হয় । কতকগুলি সরঞ্জামের নাম জানা আবশ্যক। শ্রেণী বিভাগ করিয়া তাহাদের উল্লেখ করিতেছি । ( ১ ) যঞ্জীয় কাঠের কতকগুলি টুকরা দরকার হয়, এই কাষ্ঠখণ্ডের নাম সমিং । তিনখানি সমিধে আহবনীয় অগ্নিকে ঘিরিয়া বেড়া দিতে হয়। এই তিনখানির নাম পরিধি। আর কয়খানি সমিং যাগের পূৰ্ব্বে আগুন জালাইবার জন্য পৃথকৃ থাকে। আগুন জালানর নাম সমিন্ধন। অধ্যযু একখানি আহবনীয় অগ্নিতে ফেলিয়া দেন, আর হোতা এক-একটি ঋক মন্ত্র পাঠ করেন । অগ্নি সমিন্ধনের জন্য প্রযুক্ত হয় বলিয়া এই মন্ত্রের নাম সামধেনী ঋক, । (২) কয়েক মাটি দর্ডের বা কুশের প্রয়োজন। বেদির উপরে এই কুশগুলি বিছাইয়া, তাহার উপর যাগের সরঞ্জামগুলি সাজাইয়া রাখিতে হয়। কুশের একটা অঁাটি পৃথক বাধা থাকে, তাহার নাম প্রস্তর। যে হাতায় আহুতির দ্রব্য লইয়৷ আহুতি দেওয়া হয়, তাহার নাম জুত্ব। জুন্থখানি ঐ প্রস্তরের উপরে রাখিতে হয় । এই প্রস্তর নিতান্ত সামান্য বস্তু নহে । উহার বিশেষ তাৎপৰ্য্য আছে, সে কথা পরে বলিব । (৩) পূর্ণমাস-যজ্ঞে প্রধান যাগে পুরোডাশ আহুতি হয়। তাহার পূৰ্ব্বে এবং পরে অপ্রধান যাগগুলিতে আজnহুতি হয়। যজ্ঞে ব্যবহার্য্য সংস্কৃত স্বতের নাম আজ্য। একটা মাটির মালসায় এই আজ্য থাকে, তাহার নাম আজ্যস্থালী । আজ্যস্থালী হইতে গ্রহণের জন্ত চারিখানি