পাতা:রুষ-জাপানি যুদ্ধের ইতিহাস - নলিনীবালা ভঞ্জ চৌধুরাণী.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হেরিকেরি । O দেড়টার সময় রুষগণ জাপানী জাহাজের উপর একটা টয়পেডো নিক্ষেপ করিলেন ; কিন্তু এই টরপেডো ফাটল না,-জাপানিগণও গুলি চালাইতে নিরন্ত হইল না । ,

  • দুইটার সময় রুষগণ আর একটা টারপেডো চালাইলেন। এই টরপোভেল নিমেষ মধ্যে জাপানী জাহাজ খণ্ড বিখণ্ড করিল। তখন জাপানী সেনাধ্যক্ষগণ সকলে হেরিকেরি করিলেন। এই হেরিকেরি এক ভয়ানক কাণ্ড ! যখন কোন ব্যক্তি জীবনে কোন অপকৰ্ম্ম করেন, বা শক্ৰ হন্তে আত্মসমৰ্পণ করিতে বাধ্য হইয়া উঠেন, তখন জাপানিগণ এ অবস্থায় প্রাণরক্ষা অপেক্ষা আত্মহত্যা শতগুণ শ্রেয়ঃ বিবেচনা করিয়া থাকেন। এ নিয়ম বহু সহস্ৰ বৎসর হইতে জাপানিগণের মধ্যে প্ৰচলিত আছে । এরূপ আত্মহত্যাকে জাপানিগণ পাপ কাৰ্য্য মনে করেন না, বরং অতি গৌরবান্বিত কাজ বলিয়া বিবেচনা করিয়া থাকেন। এইরূপ আত্মহত্যাকেই হেরিকেরি বলে। এই যুদ্ধে অনেক সময়েই জাপানী বীরগণ শক্ৰ হন্তে আত্মসমৰ্পণ অপেক্ষা মৃত্যু শ্ৰেয়ঃ ভাবিয়া হেরিকেরি করিয়া ছিলেন। এরূপ ব্যাপার ইতিহাসে আব দেখিতে পাওয়া যায় না। আজ কিনসু মারু জাহাজে যে সকল জাপানী বীর ছিলেন, তাহারা রুষের হস্তে আত্মসমৰ্পণ করা অপেক্ষা আনন্দ চিত্তে সকলে হেরিকোরি করিলেন । সৈন্যগণেব অধিকাংশই পরস্পর পরস্পরকে হত্যা করিল। কেবল জন কয়েক একখানা নৌকায় উঠিয়া রুষের গোলা বৃষ্টির মধ্যে প্রাণরক্ষা করিয়া “বানজাই” শব্দে চারিদিক প্ৰকম্পিত, করিতে করিতে চলিয়া গেল । একজন জাপানী সৈন্যও আত্মসমৰ্পণ করিল না। সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে কিনসু মারু সমুদ্র গর্ভে অদৃশ্য হইয়া গেল।

• এরূপ দুৰ্গমনীয় বীরত্ব আর কেহ কখনও দেখেন নাই ! পশ্চিমের সভ্য জগত বলিলেন, “জাপানিগণের আত্মসমৰ্পণ করা উচিত ছিল। তাহাদের এরূপে আত্মহত্যা করা মুর্থতা মাত্র।” কিন্তু সমস্ত জাপানের