পাতা:লালন শাহ ও লালন গীতিকা.djvu/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 핵 1 থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি তার কোনটিই ছিলেন না । তিনি জন্মগতভাবে মুসলিম সস্তান এবং মুকী সম্প্রদায়ভুক্ত ফকীর ছিলেন। এখন প্রশ্ন এই যে, মুসলিম সুফী সম্প্রদায় আর বাঙলার বাউলদের মধ্যে পার্থক্যই বা কি ? তারা কি ধর্ম-সাধনা ক্ষেত্রে সমগোত্রীয় ? বাঙলার বাউল মতের প্রবক্ত৷ ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য একখানি বিরাট গ্রন্থে এই সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন ! সংক্ষেপে তা এই— বাঙলার বাউলেরা, মিথুনাত্মক যোগ সাধক’ (কামাচারী বা বামাচারী ) । তাদের সাধনী—দেহবাদী জড়-সাধনা মাত্র । প্রকৃত ঈশ্বর-বিশ্বাস বা ঈশ্বরোপাসন। তাদের সাধনার অঙ্গীভূত নয়। • পক্ষাস্তরে, সুফীরা অধ্যাত্ম-বাদী প্রেমোপাসক । ইসলামের সুনির্দিষ্ট সাধন-পথের মাধ্যমে খোদা-প্রেমে আত্মবিলয় ( ফান ) লাভ ও অনন্ত-জীবনে উত্তরণই (বাকা ) তাদের সাধনার চরম ও পরম কথা। এমতাবস্থায় সুফী-সাধনার মধ্য থেকে বাউল সাধন ও বাউল ধর্মের জন্ম যে কি ক'রে হতে পারে, বুঝে ওঠা সত্যিই মুশকিল। কিন্তু আরও মুশকিলের ব্যাপার এই যে, ডক্টর ভট্টাচার্য র্তার “বাউল গানে” এমন সব কবি ও সাধকের বাণী ও জীবনী ১. "বাউলরা পুরুষ-দেহের বীজরুপী সত্ত্বাকে ঈশ্বর বলিয়াছে। এই বীজের স্বরূপ চাঞ্চল্যহীন নিস্তরঙ্গ অবস্থা। প্রকৃতির দেহে উত্তমাঙ্গে বা সহস্রারে বীজের স্থিতি । কিন্তু বাউলদের নিকট এই বীজসত্ত্ব। ব। ঈশ্বর শৃঙ্গার রস ভোক্তা, লীলাময় কামক্রীড়াশীল। প্রকৃতি সত্ত্বায় রজোরূপের যখন পূর্ণ প্রকাশ, তখন মস্তক হইতে এই বীজরূপী ঈশ্বর নামিয়া আসিয়া রজের সহিত মিশ্রিত হন ইত্যাদি’ । ( বাংলার বাউল ও বাউল গান : ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, কলিকাতা, পৃঃ ৩৮৯ )