পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ আসিয়া নমস্কার করিল, বলিল, এস গোসাই, আমার ঘরে বসবে চল । আমার বিছানা প্রভৃতি স্টেশনে রাখিয়া শুধু ব্যাগটাই সঙ্গে আনিয়াছিলাম, আর ছিল গহরের সেই বাক্সটা আমার চাকরের মাথায় । কমললতার ঘরে আসিয়া সেগুলো তাহার হাতে দিয়া বলিলাম, একটু সাবধানে রেখে দাও, বাক্সটায় অনেকগুলা টাকা আছে । কমললতা বলিল, জানি । তারপরে খাটের নীচে সেগুলো রাখিয়া দিয়া জিজ্ঞাসা করিল, তোমার চা খাওয়া হয়নি বোধ হয় ? না ! কখন এলে ? বিকেলবেলা । যাই, তৈরী করে আনিগে, বলিয়া চাকরটাকে সঙ্গে করিয়া উঠিয়া গেল । পদ্মা মুখ-হাত ধোয়ার জল দিয়া চলিয়া গেল, দাড়াইল না। 總 আবার মনে হইল ব্যাপার কি ! খানিক পরে কমললতা চা লইয়া আসিল, আর কিছু ফল-মূল-মিষ্টান্ন ও-বেলার ঠাকুরের প্রসাদ । বহুক্ষণ অভুক্ত --অবিলম্বে বসিয়া গেলাম । অনতিবিলম্বে ঠাকুরের সন্ধ্যারতিব শঙ্খ-ঘণ্টা-কঁাসরের শব্দ আসিয়া পৌছিল, জিজ্ঞাসা করিলাম, কই তুমি গেলে না ? না, আমার বারণ । বারণ ! তোমার ! তার মানে ? কমললতা স্নান হাসিয়া কহিল, বারণ মানে বারণ গোঁসাই। অর্থাৎ ঠাকুরঘরে যাওয়া আমার নিষেধ । আহারে রুচি চলিয়া গেল—বারণ করলে কে ? বড়গোসাইজীর গুরুদেব । আর তার সঙ্গে এসেচেন র্যার-তারা। কি বলেন তারা ? বলেন আমি অশুচি, আমার সেবায় ঠাকুর কলুষিত হন। অশুচি তুমি ? বিদ্যুদ্বেগে একটা কথা মনে জাগিল—সন্দেহ কি গহরকে নিয়ে ? ই তাই । কিছুই জানি না, তবু অসংশয়ে বলিয়া উঠিলাম, এ মিথ্যে–এ অসম্ভব! অসম্ভব কেন গোসাই ? তা জানি না কমললত, কিন্তু এত বড় মিথ্যে আর নেই। মনে হয় মানুষের সমাজে এ তোমার মৃত্যুপথযাত্রী বন্ধুর ঐকান্তিক সেবার শেষ পুরস্কার । তাহার চোখ জলে ভরিয়া গেল, বলিল, আর আমার দুঃখ নেই। ঠাকুর ש8ג