পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় कहे नां । না বললে শুনবো কেন ? খাওয়া-দাওয়ার কখনো যত্ব নিচ্ছেন না। অবহেলা করলে শরীর থাকবে কেন—দুদিনেই ভেঙে পড়বে যে । না ভাঙবে না, শরীর আমার খুব মজবুত। বিমলবাবু উত্তরে অল্প হাসিয়া বলেন, শরীরটা মজবুত হয়েই যেন বালাই হয়ে উঠেচে। এটাকে ভেঙে ফেলাই এখন দরকার—না ? সত্যি কি-না বলুন তো ? সবিত কষ্টে অশ্র সংবরণ করিয়া চুপ করিয়া থাকেন। বিমলবাবু বলেন, গাড়িটা পড়ে রয়েচে, মিছিমিছি ড্রাইভারের মাইনে দিচ্চেন, বিকেলের দিকে একটু বেড়াতে যান না কেন ? বেড়াতে আমি তো কোনকালেই যাইনে বিমলবাবু! শুনিয়া বিমলবাবু পুনরায় একটু হাসিয়া বলেন, তা বটে। বিনা কাজে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যেস আমারও নেই । আজ রাখালবাবু এসেছিলেন ? না ! কালও আসেননি তো ? না, চার-পাচদিন তাকে দেখিনি । হয়তো কোন বাজে কাজে ব্যস্ত আছে। বাজে কাজে ? ঐ তার স্বভাব, না ? ই, ঐ ওর স্বভাব। বিনা স্বার্থে পরের বেগার খাটতে ওর জোড়া নেই। বিমলবাবু অন্তমনে কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকেন। দূরে সারদাকে দেখা যায়, তিনি হাত নাড়িয়া কাছে ডাকেন, বলেন, কই, আজ আমাকে জল দিলে না মা ? তোমার হাতের জল আর পান না খেলে তৃপ্তি হয় না । সারদা জল ও পান আনিয়া দেয়। নিঃশেষ করিয়া এক গ্লাস জল খাইয়া পান মুখে দিয়া বিমলবাবু উঠিয়া দাড়ান, বলেন, আজ তা হলে আসি ! সবিতা নিজেও উঠিয়া দাড়ান, নমস্কার করিয়া বলেন, আমুন। দিন-তিনেক পরে এমনিধারা আলাপের পরে বিমলবাবু উঠিবার উপক্রম করিতেই সবিত কহিলেন, আজ আপনার কাজের একটু আমি ক্ষতি করবো। এখুনি যেতে পাবেন না, বসতে হবে। বিমলবাবু বসিয়া বলিলেন, একটু বললে আমার কাজের ক্ষতি হয়, এ আপনাকে কে বললে ? সবিতা কহিলেন, কেউ বলেনি, এ আমার অনুমান। আপনার কত কাজ– মিছে সময় নষ্ট হয়তো ? বিমলবাবু ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, তা জানিনে ; কিন্তু এইজন্যই কি কখনো বলতে বলেন না ? সত্যি বলুন তো ? ???