বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ আচ্ছা, বলিয়া অজিত অবিনাশবাবুকে সঙ্গে করিয়া বাহির হইয়া গেলে আগুবাবু মৃদ্ধ হাস্ত করিয়া কহিলেন, এ ছেলের মোটরে ঘোর বাতিক দেখচি এখনো যায়নি। এ ঠাণ্ডায় চললো বেড়াতে । իոյծ দিন-পনেরো পরের কথা । সন্ধ্যা হইতে বিলম্ব নাই, অজিত আগুবাবু ও মনোরমাকে অবিনাশবাবুর বাটতে নামাইয়া দিয়া একাকী ভ্রমণে বাহির হইয়াছিল। এমন সে প্রায়ই করিত। যে পথটা সহরের উত্তর হইতে আসিয়া কলেজের সন্মুখ দিয়া কিছুদূর পর্য্যন্ত গিয়া সোজা পশ্চিমে চলিয়া গিয়াছে তাহারই একটা নিরালা জায়গায় সহসা উচ্চ নারীকণ্ঠে নিজের নাম গুনিয়া অজিত চমকিয়া গাড়ী থামাইয়৷ দেখিল শিবনাথের স্ত্রী কমল। পথের ধারে ভাঙা-চোরা পুরাতনকালের একটা দ্বিতল বাড়ি, স্বমুখে একটুখানি তেমনি শ্ৰীহীন ফুলের বাগান, তাহারই একধারে দাড়াইয়া কমল হাত তুলিয়া ডাকিতেছে। মোটর থামিলে সে কাছে আসিল, কহিল, আর একদিন আপনি এমনি একলা যাচ্ছিলেন, আমি কত ডাকলুম, কিন্তু শুনতে পেলেন ন । পাবেন কি করে ? বাপ, রে বাপ ! যে জোরে যান, দেখলে মনে হয় যেন দম বন্ধ হয়ে যাবে। আপনার ভয় করে না ? অজিত গাড়ী হইতে নীচে নামিয়া দাড়াইল, কহিল, আপনি একলা যে ? শিবনাথবাবু কই ? 嘯 "মল কহিল, তিনি বাড়ি নেই। কিন্তু আপনিই বা একাকী বেরিয়েচেন কেন ? সেদিনও দেখেছিলাম সঙ্গে কেউ ছিল না। অজিত কহিল, না। এ কয়দিন আগুবাবুর শরীর ভাল ছিল না। তাই তারা কেউ বার হননি। আজ তাদের অবিনাশবাবুর ওখানে নামিয়ে দিয়ে আমি বেড়াতে বেরিয়েচি। সন্ধ্যাবেল কিছুতেই আমি ঘরে থাকতে পারিনে। কমল কহিল, আমিও না । কিন্তু পরিনে বললেই ত হয় না—গরীবদের অনেক কিছুই সংসারে পারতে হয়। এই বলিয়া সে অজিতের মুখের পানে চাহিয়া হঠাৎ বলিয়া উঠিল, নেবেন আমাকে সঙ্গে করে? একটুখানি ঘুরে আসবে। 6२