পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ করিয়া বলিল, সাবধানে থেকো—আর যদি কোন-কিছুর বিশেষ আবগুক হয়, দাদার কাছে ঠিকানা জেনে নিয়ে আমাকে চিঠি লিখে । অত:পর দুইজনেই চুপ করিয়া রহিল। এবার ললিতা সঙ্গে যাইবে না, শেখর তাহা জানিতে পারিয়াছে, এবং তাহার কারণটাও হয়ত শুনিয়াছে মনে করিয়া ললিতা লজ্জায় সঙ্কুচিত হইতে লাগিল । হঠাৎ শেখর কহিল, আচ্ছা যাও এখন, আমাকে আবার এইগুলো গুছিয়ে নিতে হবে । বেলা হ’লো, আজ একবার অফিসেও যেতে হবে । ললিতা তোরঙ্গের সম্মুখে হাটু গাড়িয়া বসিয়া বলিল, তুমি স্বান কর গে, আমি গুছিয়ে দিচ্চি । তা হলে ত ভালই হয়, বলিয়া শেখর চাবির গোছাটা ললিতার কাছে ফেলিয়া দিয়া ঘরের বাহিরে অসিয়া সহসা থমকিয়া দাড়াইয়া বলিল, আমার কি দরকার হয়, তা ভুলে যাওনি ত? ললিতা মাথা ঝু কাইয়া তোরঙ্গের জিনিসপত্র পরীক্ষা করিতে লাগিল, সে-কথার কোন জবাব দিল না। শেখর নীচে গিয়া মাকে জিজ্ঞাসা করিয়া জানিল, কালীর সমস্ত সংবাদই সত্য। গুরুচরণ ঋণ পরিশোধ করিয়াছেন, সে কথাও সত্য । ললিতার পাত্র স্থির করিবার বিশেষ চেষ্ট হইতেছে, তাহাও সত্য। সে আর কিছু জিজ্ঞাসা না করিয়া স্নান করিতে চলিয়া গেল । r ঘণ্টা-দুই পরে স্নানাহার শেষ করিয়া অফিসের পোষাক পরিতে নিজের ঘরে ঢুকিয় সে সত্যই অবাক হইয়া গেল ! এই দুই ঘণ্টাকলে ললিত কিছুই করে নাই, তোরঙ্গের একটা পাটির উপর মাথা রাখিয়া চুপ করিয়া বসিয়া ছিল। শেখরের পদশদ্ধে চকিত হইয়া মুখ তুলিয়াই ঘাড় হেঁট করিয়া রহিল। তার দুই চোখ জবাফুলের মত রক্তবর্ণ হইয়াছে। কিন্তু শেখর তাহ দেখিয়া ও দেখিল না, অফিসের পোষাক পরিতে পরিতে সহজভাবে বলিল, এখন পারবে না ললিতা, দুপুরবেলা এসে গুছিয়ে রেখে । বলিয়া প্রস্তুত হইয়া আফিসে চলিয়া গেল। সে ললিতার রাঙা চোখের হেতু ঠিক বুঝিয়াছিল, কিন্তু সব দিক বেশ করিয়া চিন্তা না-করা পৰ্যন্ত আর কোন কথা বলিতে সাহস করিল না। 旅游 r সেদিন অপরাহ্নে মামাদের চা দিতে আসিয়া ললিত সহসা জড়-সড় হইয়া পড়িল । আজ শেখর বসিয়াছিল। সে গুরুচরণবাবুর কাছে বিদায় লইতে আসিয়াছিল। . ললিত ঘাড় ষ্টেট করিয়া বাট চা প্রস্তুত করিয়া গিরীন ও মামার সম্মুখ নিতেই গিরীন কহিল, শেখরবাবুকে গ দিলে মাললিতা ? - ቅዱ8