পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কি আছে মা এ ভাড়ারে ? এ চাবির গুচ্ছ অত্যন্ত পরিচিত, দ্বিজদাস কটাক্ষে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিল, আছে যা ছোয়া-চুরির নাগালের বাইরে, আছে সোনা-রূপে, টাকা-কড়ি, চেলি-গরদের জোড় । যা অতি বড় ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তিরও মাথায় তুলে নিতে আপত্তি হবে না তুমি ছু লেও। 職 বন্দন জিজ্ঞাসা করিল, কি করতে হবে মা আমাকে ? দয়াময়ী বললেন, অধ্যাপক-বিদায়, অতিথি-অভ্যাগতদের সম্মান-রক্ষা, আত্মীয়স্বজনগণের পাথেয়র ব্যবস্থা,—আর ঐ সঙ্গে রাখবে এই ছেলেটাকে একটু কড়া শাসনে। এই বলিয়া তিনি দ্বিজদাসকে দেখাইয়ু কহিলেন, আমি হিসেব বুঝিনে বলে ও আমাকে ঠকিয়ে যে কত টাকা নিয়ে অপব্যয় করেছে তার ঠিকানা নেই মা । এইটি তোমাকে বন্ধ করতে হবে। দ্বিজদাস বলিল, দাদার সামনে এমন কথা তুমি বোলো না মা । উনি ভাববেন সত্যিই বা । খরচের খাতায় রীতিমত ব্যায়ের হিসেব লেখা হচ্ছে মিলিয়ে দেখলেই দেখতে পাবে । দয়াময়ী বলিলেন, মেলাবো কোনটা ? ব্যয়ের হিসেব লেখা হচ্ছে মানি, কিন্তু অপব্যয়ের হিসেব কে লিখচে বল তো? আমি সেই কথাই বন্দনাকে জানাচ্ছিলুম। বন্দন বলিল, জেনেই বা কি করবো মা ? ওঁর টাকা উনি অপব্যয় করলে আমি আটকাবো কি করে। দয়াময়ী কহিলেন, সে আমি জানিনে। তুমি ভার নিতে চেয়েছিলে, আমি ভার দিয়ে নিশ্চিন্ত হলুম ; কিন্তু একটা কথা বলি বন্দন, তোমাকেও একদিন সংসার করতে হবে, তখন অপব্যয় বাচানোর দায় এসে যদি হাতে ঠেকে জানিনে বলেই তো নিস্তার পাবে না। বদন দ্বিজদাসের প্রতি চাহিয়া কহিল, শুনলেন তো মায়ের হুকুম ? দ্বিজদাস কহিল, শুনলুম বই কি। কিন্তু দাদা দিয়েচেন আমার ওপর খরচ করার ভার, মা দিলেন তোমাকে খরচ না করার ভার। স্বতরাং খণ্ডযুদ্ধ বাধবেই, তখন দোষ দিলে চলবে না । r. বদনা মাথা নাড়িয়া স্মিতমুখে বলিল, দোষ দেবার দরকার হবে না দ্বিন্ধুবাবু, ঝগড়া আমাদের হবে না। আপনার টাকা নিয়ে আপনার সঙ্গেই মক্‌-ফাইট, শুরু করবার ছেলেমামুষি আমার গেছে। বাঙলাদেশে এসে সে শিক্ষা আমার হয়েচে। ঝগড়ার আগে মায়ের দেওয়া ভার মার হাতেই ফিরিয়ে দিয়ে আমি সরে যাবো । দয়াময়ী ঠিক না বুঝিলেও বুঝিলেন এ অভিমান স্বাভাবিক। ব্যথিত-কণ্ঠে ృళిని