পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মন্দির রৌপ্য-সিংহাসনে তাঁহারই প্রতিষ্ঠিত। বৃন্দাবনলীলার কত অপরূপ চিত্র মন্দির-গাত্রে সংলগ্ন । উপরে কিংখাপের চন্দ্ৰাতপ, তাহতে শতশাপার ঝাড় ছলিতেছে। এক পার্থে মৰ্ম্মর বেদীর উপর উপকরণ সজ্জিত ; এবং নিত্যনিবেদিত পুষ্প-চন্দনের ঘনসেরিভে মন্দিরাভ্যস্তর সমাচ্ছন্ন। বুঝি, স্বর্গমুখ ও সৌন্দর্ঘ্যের কথা স্মরণ করাইয়। দিত্বে এই পুষ্প ও গন্ধ পূজার প্রথম উপাচার হইয়া আছে, এবং তাহারই স্বকোমল স্বরভি বায়ুর স্তরে স্তরে সঞ্চিত হইয়া মন্দির বায়ুকে নিবিড় করিয়া রাখিয়াছে। 8 অনেকদিনের কথা বলিতেছি। জমিদার রাজনারায়ণবাবু যখন প্রৌঢ়ত্বের সীমায় পা দিয়া প্রথম বুঝিলেন যে, এ-জীবনের ছায়া ক্রমশঃ দীর্ঘ ও অস্পষ্ট হইয়া আসিতেছে , যেদিন সর্বপ্রথম বুঝিলেন যে, এ জমিদারী ও ধন-ঐশ্বৰ্ষ্য ভোগের মিয়াদ প্রতিদিন কমিয়া আসিতেছে ; প্রথম যেদিন মন্দিরের এক পার্থে দাড়াইয়া চোখ দিয়া অনুতাপাশ্র বিগলিত হইয়াছিল, আমি সেইদিনের কথা বলিতেছি। তখন তাহার একমাত্র কল্প অপর্ণা—পাঁচ বৎসরের বালিকা । পিতার পায়ের কাছে দাড়াইয়া একমনে সে দেখিত, মধুসূদন ভট্টাচাৰ্য্য চন্দন দিয়া কালো পুতুলটি চচ্চিত করিতেছেন, ফুল দিয়া সিংহাসন বেষ্টন করিতেছেন এবং তাহারই স্নিগ্ধ গন্ধ আশীৰ্ব্বাদের মত যেন তাহাকে স্পর্শ করিয়া ফিরিতেছে । সেইদিন হইতে প্রতিদিনই এই বালিকা সন্ধ্যার পর পিতার সহিত ঠাকুরের আরতি দেখিতে আসিত এবং এই মঙ্গল-উংসবের মধ্যে অকারণে বিভোর হইয়া চাহিয়া থাকিত। ক্রমে অপর্ণ বড় হইতে লাগিল। হিন্দুর মেয়ে—ঈশ্বরের ধারণ যেমন করিয়া হৃদয়ঙ্গম করে, সেও তাছাই করিতে লাগিল, এবং পিতার নিতান্ত আদরের সামগ্ৰী এই মন্দিরটি যে তাহারও বক্ষ-শোণিতের মত, একথা সে তাহার সমস্ত কৰ্ম্ম ও খেলা-ধূলার মধ্যেও প্রমাণ করিতে বসিল । সমস্ত দিন এই মন্দিরের কাছাকাছি থাকিত এবং একটি শুষ্ক তৃণ বা একটি শুষ্ক ফলও সে মন্দিরের ভিতরে পডিয়া থাকা সহ করিতে পারিত না। এক ফোটা জল পণ্ডিলে সে সযতনে আঁচল দিয়া তাহা মুছিয়া লইত। রাজনারায়ণবাবুর দেবনিষ্ঠা—লোকে বাড়াবাড়ি মনে করিত, কিন্তু অপর্ণার দেবসেবাপরায়ণতা সে সীমাও অতিক্রম করিতে উষ্ঠত হইল । সাবেক পুপপাত্রে আর কুল জাটে না—একটা বড় আসিয়াছে। চন্দনের পুরাতন че за مa-سiه