পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দননগরে আলাপ-সভায় থাকেন, আপনি সব ভেঙ্গে যেতে পারেন ; কিন্তু আমার মনে হয়, ধ্বংসের গানের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠার চিস্তাও আপনার মধ্যে রয়েছে। উদীয়মান জাতির পক্ষ থেকে, আপনার কাছ থেকে একটা Positive something চাইছি। আপনি আঘাত দিতে পারেন, কিন্তু আমার বিশ্বাসকে ‘না করতে পারেন না । আপনারও যেমন একটা বিশ্বাস আছে, আপনার হা'-কে আমি না’ করাতে পারব না, তেমনি আমারও একটা বিশ্বাস আছে । - ধৰ্ম্মকে মেরামত নয়, আমি ধর্মের নূতন রূপ দিতে বলি ! ধৰ্ম্ম মোক্ষবাদ নয় । হিন্দু আজ ধৰ্ম্ম বলতে (জীবনকে বাদ দিয়ে ?) আত্মপ্রতারণা করছে। এত বড় insincerity হিন্দুর মত আর কোথাও নেই। অক্ষমতা যার মূল ভিত্তি, সে জাতি কখনও প্রতিষ্ঠা পায় না। আপনার লেখার মধ্যে যে বাস্তব তার পরিচয় পাই —ধ্বংসনীতিরও মধ্য দিয়ে সেই রকম একটা Positive কিছুর সন্ধান আপনাকে দিতে হবে । শেষ প্রশ্নে’র পরও আপনাকে লেখনী ধরতে হবে । শেষ আলো আপনাকে দিয়ে যেতেই হবে, বলতে হবে—“ধ্বংসের পর কি দিয়ে গেলেন !” শরৎবাবু।–“মতিবাবুর কথায় আমার কথার ঠিক উত্তর পেলুম না। আমার কথাটা বোধ হয় ধরতে পারছেন না ? আমি এই কথাই বলতে চাই—মেরামত করে কিছু দাড় করাচ্ছেন–( এটা ভাল নয় ? )” মতিবাবু—“বলেছি—ভারতের ধৰ্ম্ম মোক্ষ নয়। মুক্তির অর্থ—বাসনা ও অহঙ্কার * থেকে মুক্তি—জীবন থেকে মুক্তি নয়। মুক্তি—মুচ, ধাতু থেকে—অহং ও বাসনা গেলে, এই জীবনেই মুক্তির আস্বাদ পাওয়া যেতে পারে, জীবনকে লয় করে নয়। বাসনা-অহঙ্কার-মুক্ত মানুষ Infinite Power-এর সঙ্গে যুক্ত হবে—Bliss and Light-এর reflection জীবনকে অধিকার করবে। মুক্তির আস্বাদ ইহজীবনেই লাভ না করতে পারলে ধৰ্ম্মের উদ্দেশু সিদ্ধ হবে না। শ্রদ্ধা-বস্তুর একটা সনাতন রূপ আছে--যে জিনিসটার উপর কোটী কোটী লোকের শ্রদ্ধা আছে, সেটাকে ভাঙ্গবার চেষ্টা মা করে, তার যোগ্য ব্যবহার করতে পারলেই আমরা অধিকতর ফল লাভ করব । এ-সম্বন্ধে বিশেষ আলোচনা পরে হবে। এই সভায় অধিক আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়ে আপনার মহামূল্য উপদেশ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।” শরৎবাবু।–“মহামূল্য উপদেশ কিছু দিতে পারব না। আমি যেটা করব বহুম—( 1 ) অহঙ্কার ও বাসনা হতে মুক্তির কথা যা বল্পেন—সেগুলির দরকার । তবে আর আর জাত-যারা (আমাদের মাথায় পা দিয়ে বেড়াচ্ছে (?) তারা সব যেভাবে বড় হয়েছে, সেইভাবে ( আমাদের বড় হতে হবে :)”— Ψρί"2