পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৃত্যু ও অমৃত সম্প্রতি অকস্মাৎ আমার একটি বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। এই উপলক্ষে জগতে সকলের চেয়ে পরিচিত যে মৃত্যু তার সঙ্গে আর একবার নূতন পরিচয় হল । জগৎটা গায়ের চামড়ার মতো অত্যন্ত আঁকড়ে ধরেছিল, মাঝখানে কোনো ফাক ছিল না। মৃত্যু যখন প্রত্যক্ষ হল তখন সেই জগৎটা যেন কিছু দূরে চলে গেল, আমার সঙ্গে আর যেন সে অত্যন্ত সংলগ্ন হয়ে রইল না। * এই বৈরাগ্যের দ্বারা আত্মা যেন নিজের স্বরূপ কিছু উপলব্ধি করতে পারল । সে যে জগতের সঙ্গে একেবারে অচ্ছেদ্যভাবে জড়িত নয়, তার ষে একটি স্বকীয় প্রতিষ্ঠা আছে, মৃত্যুর শিক্ষায় এই কথাটা যেন অনুভব করতে পারলুম। র্যার মৃত্যু হল তিনি ভোগী ছিলেন এবং তার ঐশ্বর্ষের অভাব ছিল ন। তার সেই ভোগের জীবন এবং ভোগের আয়োজন— যা কেবল র্তার কাছে নয়, সর্বসাধারণের কাছে অত্যস্ত সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছিল— যা কতপ্রকার সাজে-সজ্জায় জাকে-জমকে লোকের চক্ষুকর্ণকে ঈর্ষা ও লুন্ধতায় আকৃষ্ট করে আকাশে মাথা তুলেছিল— তা একটি মুহূর্তেই শ্মশানের ভস্মমুষ্টির মধ্যে অনাদরে বিলুপ্ত হয়ে গেল। সংসার যে এতই মিথ্যা, তা যে কেবল স্বপ্ন, কেবল মরীচিকা, নিশ্চিত মৃত্যুকে স্মরণ করে শাস্ত্র সেই কথা চিন্তা করৰার জন্তে বারবার উপদেশ করেছেন। নতুবা আমরা কিছুই ত্যাগ করতে পারি নে, এবং ভোগের বন্ধনে জড়িত থেকে আত্মা নিজের বিশুদ্ধ মুক্তস্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে না । . . . . . কিন্তু, সংসারকে মিথ্যা মরীচিক ৰলে ত্যাগকে সহজ করে তোলার