পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●8〉。 পাওয়া ও না-পাওয়া সেই পাওয়াতেই মাহুষের মন আনন্দিত যে পাওয়ার সঙ্গে না-পাওয়া জড়িত হয়ে আছে । যে সুখ কেবলমাত্র পাওয়ার দ্বারাই আমাদের উন্মত্ত করে তোলে না, অনেকখানি না-পাওয়ার মধ্যে যার স্থিতি আছে ব’লেই যার ওজন ঠিক আছে, সেইজন্তেই যাকে আমরা গভীর মুখ বলি— অর্থাৎ, যে সুখের সকল অংশই একেবারে সুস্পষ্ট স্বব্যক্ত নয়, যার এক অংশ নিগুঢ়তার মধ্যে অগোচর, যা প্রকাশের মধ্যেই নিঃশেষিত নয়— তাকেই আমরা উচ্চ শ্রেণীর মুখ বলি । পেট ভরে আহার করলে পর আহার করবার স্থখটা সম্পূর্ণ পাওয়া যায়, দর্শনে স্পর্শনে ভ্রাণে স্বাদে সর্ব প্রকারে তাকে সম্পূর্ণ আয়ত্ত করা হয়। সে সুখের প্রতি যতই লোভ থাকুক, মানুষ তাকে আনন্দের কোঠায় ফেলে না । কিন্তু, যে সৌন্দর্যবোধকে আমরা কেবলমাত্র ইন্দ্ৰিয়বোধের দ্বারা সেরে ফেলতে পারি নে— যা বীণার অনুরণনের মতো চেতনার মধ্যে স্পন্দিত হতে থাকে, যা সমাপ্ত হতেই চায় না, সে আনন্দকে আমরা আহারের আনন্দের সঙ্গে এক শ্রেণীতে গণ্যই করি নে। কেবলমাত্র পাওয়া তাকে অপমানিত করে না, না-পাওয়া তাকে গৌরব দান করে। আমরা জগতে পাওয়ার মতো পাওয়া তাকেই বলি যে পাওয়ার মধ্যে অনির্বচনীয়তা অাছে। যে জ্ঞান কেবলমাত্র একটি খবর তার মূল্য অতি অল্প, কেননা, সেটা একটা সংকীর্ণ জানার মধ্যেই ফুরিয়ে যায় । কিন্তু, যে জ্ঞান তথ্য নয়, তত্ত্ব, অর্থাৎ যাকে কেবল একটি ঘটনার মধ্যে নিঃশেষ করা যায় না, যা অসংখ্য অতীত ঘটনার মধ্যেও আছে এবং যা অসংখ্য ভাবী ঘটনার মধ্যেও আপনাকে প্রকাশ করবে,