পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WONGly> শাস্তিনিকেতন যোগে জগতে তোমার আনন্দরূপ দেখতে পাই । তোমার সাধকের এই আশ্রমটির যে একটি আনন্দরূপ আছে সেইটি দেখতে পেলেই আমাদের আশ্রমবাসের সার্থকতা হবে । কিন্তু সেটি তো অচেতনভাবে হবে না, সেটি তো মুখ ফিরিয়ে থাকলে পাব না। হে যোগী, তুমি যে আমাদের দিক থেকেও যোগ চাও— জ্ঞানের যোগ, প্রেমের যোগ, কর্মের যোগ । আমরা শক্তির দ্বারাই তোমার শক্তিকে পাব, ভিক্ষার দ্বারা নয়, এই তোমার অভিপ্রায়। তোমার জগতে যে ভিক্ষুকতা করে সেই সব চেয়ে বঞ্চিত হয়। যে সাধক আত্মার শক্তিকে জাগ্রত ক’রে ‘আত্মানং পরিপগুতি’, ‘ন ততো বিজুগুপ্ততে’। সে এমনি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে যে আপনাকে আর গোপন করতে পারে না। অগজ উৎসবের দিনে তোমার কাছে সেই শক্তির দীক্ষা আমরা গ্রহণ করব। আমরা আজ জাগ্রত হব, চিত্তকে সচেতন করব, হৃদয়কে নির্মল করব ; আমরা আজ যথার্থভাবে এই আশ্রমের মধ্যে প্রবেশ করব। আমরা এই আশ্রমকে গভীর করে, বৃহৎ করে, সত্য ক’রে, ভূত ও ভবিষ্যতের সঙ্গে একে সংযুক্ত করে দেখব ; যে সাধক এখানে তপস্যা করেছেন তার আনন্দময় বাণী এর সর্বত্র বিকীর্ণ হয়ে রয়েছে, সেটি আমরা অস্তরের মধ্যে অনুভব করব— এবং তার সেই জীবনপূর্ণ বাণীর দ্বারা বাহিত হয়ে এখানকার ছায়ায় এবং আলোকে, আকাশে এবং প্রাস্তরে, কর্মে এবং বিশ্রামে, আমাদের জীবন তোমার অচল আশ্রয়ে, নিবিড় প্রেমে, নিরতিশয় আনন্দে গিয়ে উত্তীর্ণ হবে ; এবং চন্দ্রস্থর্য অগ্নিবায়ু তরুলত৷ পশুপক্ষী কীটপতঙ্গ সকলের মধ্যে তোমার গভীর শাস্তি, উদার মঙ্গল ও প্রগাঢ় অদ্বৈতরল অঙ্কুভব করে শক্তিতে এবং ভক্তিতে সকল দিকেই পরিপূর্ণ হয়ে উঠতে থাকবে। r