পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\988 শান্তিনিকেতন ইন্দ্রিয়াণি পরাণ্যাহুবিন্দ্রিয়েভ্য: পরং মনঃ। মনসস্তু পরা বুদ্ধিৰ্যে বুদ্ধে পরতন্তু স: | ইন্দ্রিয়গণকে শ্রেষ্ঠ পদার্থ বলা হয়ে থাকে, কিন্তু ইন্দ্রিয়ের চেয়ে মন শ্ৰেষ্ঠ, আবার মনের চেয়ে বুদ্ধি শ্রেষ্ঠ, আর বুদ্ধির চেয়ে যা শ্রেষ্ঠ তা হচ্ছেন তিনি। ইন্দ্ৰিয়সকল কেন শ্রেষ্ঠ ? না, ইন্দ্রিয়ের দ্বারা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের যোগসাধন হয়। কিন্তু সে যোগ আংশিক । ইন্দ্রিয়ের চেয়ে মন শ্রেষ্ঠ, কারণ, মনের দ্বারা যে জ্ঞানময় যোগ ঘটে তা ব্যাপকতর। কিন্তু জ্ঞানের যোগেও সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ দূর হয় না। মনের চেয়ে বুদ্ধি শ্রেষ্ঠ, কারণ, বোধের দ্বারা যে চৈতন্যময় যোগ তা একেবারে পরিপূর্ণ। সেই যোগের দ্বারাই আমরা সমস্ত জগতের মধ্যে র্তাকেই উপলব্ধি করি যিনি সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। এই সকলের চেয়ে শ্রেষ্ঠকে সকলের মধ্যেই বোধের দ্বারা অনুভব করা ভারতবর্ষের সাধনা ৷ অতএব, যদি আমরা মনে করি ভারতবর্ষের এই সাধনাতেই দীক্ষিত করা ভারতবাসীর শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত, তবে এটা মনে স্থির রাখতে হবে যে কেবল ইন্দ্রিয়ের শিক্ষা নয়, কেবল জ্ঞানের শিক্ষা নয়, বোধের শিক্ষণকে আমাদের বিদ্যালয়ে প্রধান স্থান দিতে হবে। অর্থাৎ, কেবল কারখানায় দক্ষতাশিক্ষা নয়, স্কুল-কলেজে পরীক্ষায় পাস করা নয় ; আমাদের যথার্থ শিক্ষা তপোবনে— প্রকৃতির সঙ্গে মিলিত হয়ে, তপস্যার দ্বারা পবিত্র হয়ে । আমাদের স্কুল-কলেজেও তপস্তা আছে, কিন্তু সে মনের তপস্যা, জ্ঞানের তপস্যা । বোধের তপস্যা নয় । জ্ঞানের তপস্তায় মনকে বাধামুক্ত করতে হয়। ষে-সকল পূর্বসংস্কার আমাদের মনের ধারণাকে একবেণকা করে রাখে তাদের ক্রমে ক্রমে