বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর অভ্যুদয়
২৫

শাহজী বিজাপুরে বন্দী

 ১৬৪৮ সালের মাঝামাঝি শিবাজী এতদুর পর্য্যন্ত অধিকার বিস্তার করিয়া ফেলিলেন। কিন্তু ঠিক সেই সময় এক নূতন বিপদ আসিয়া তাঁহাকে বাধা দিল। ২৫এ জুলাই তাঁহার পিতা শাহজী বিজাপুরসেনাপতি মুস্তাফা খাঁর আজ্ঞায় জিঞ্জি দুর্গের বাহিরে কারারুদ্ধ হইলেন; তাঁহার সম্পত্তি ও সৈন্য রাজসরকারে জব্‌ত করা হইল। অনেক পরে রচিত ইতিহাসে এই ঘটনার কারণ মিথ্যা করিয়া লেখা হইয়াছে যে, বিজাপুরের সুলতান শিবাজীকে দমন করিবার জন্য শাহজীকে কয়েদ করেন, এবং শিবাজী বশ না মানিলে শাহজীর কারাদ্বার ইট গাঁথিয়া বন্ধ করিয়া তাঁহাকে জীবন্ত গোর দেওয়া হইবে, এরূপ শাসান। কিন্তু সমসাময়িক সরকারী ফারসী-ইতিহাস (জহর বিন্ জহুরীকৃত মহম্মদ আদিল শাহের রাজত্ব-বিবরণ) হইতে জানা যায়, বিজাপুরী সৈন্যগণ যখন বহদিন যুদ্ধ করিয়াও জিঞ্জি দুর্গ লইতে পারিল না, তাহাদের অন্নকষ্ট উপস্থিত হইল, তখন শাহজী প্রধান সেনাপতির নিষেধ অগ্রাহ করিয়া সসৈন্য রণত্যাগ করিয়া নিজ জাগীরে যাইবার জন্য প্রস্তুত হইলেন। সর্বোচ্চ সেনাধ্যক্ষ নবাব মুস্তাফা খাঁ দেখিলেন, দুর্গ-অবরোধ ত একেবারে পণ্ড হইয়া যায়, অথচ শাহজীর পলায়নে বাধা দিলে নিজেদের মধ্যে কাটাকাটি আরম্ভ হইবে। তখন তিনি বুদ্ধি করিয়া বিনাযুদ্ধে শাহজীকে বন্দী করিলেন; তাহার সমস্ত সম্পত্তি জব্‌ত করিলেন,— এক কণামাত্র গোলমালে লুঠ হইতে পারিল না।

 ঊনবিংশ শতাব্দীতে রচিত মারাঠী গ্রন্থে প্রকাশ মুদ্‌হোল গ্রামের জাগীরদার বাজী রাও ঘোরপড়ে মুস্তাফা খাঁর ইঙ্গিতে নিমন্ত্রিত শাহজীকে নিজ শিবিরে আনিয়া বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া তাঁহাকে কয়েদ করেন। এই অপরাধের প্রতিশোধ লইবার কয়েক বৎসর পরে শাহজী