কাঁদ্চেন। আমাকে বল্লেন, রতন, কি হবে বাবা; তোরা পিছনে যা। আমি এক-একমাসের মাইনে তোদের বকসিস্ দিচ্ছি। আমি বল্লুম, ছট্টুলাল আর গণেশকে সঙ্গে নিয়ে আমি যেতে পারি মা; কিন্তু পথ চিনিনে। এমন সময় চৌকিদার হাঁক দিতেই মা বল্লেন, ওকে ডেকে আন্ রতন, ও নিশ্চয়ই পথ চেনে। বেরিয়ে গিয়ে ডেকে আন্লুম। চৌকিদার ছ টাকা হাতে পেয়ে, তবে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে। আচ্ছা বাবু, কচিছেলের কান্না শুন্তে পেয়েছেন? বলিয়া রতন শিহরিয়া উঠিয়া, আমার কোটের পিছনটা চাপিয়া ধরিল। কহিল, আমাদের গণেশ পাঁড়ে বামুনমানুষ, তাই আজ রক্ষে পাওয়া গেছে, নইলে—
আমি কথা কহিলাম না। প্রতিবাদ করিয়া কাহারো ভুল ভাঙ্গিবার মত মনের অবস্থা আমার ছিল না। আচ্ছন্ন অভিভূতের মত নিঃশব্দে পথ চলিতে লাগিলাম।
কিছুদূর আসার পর রতন প্রশ্ন করিল, আজ কিছু দেখতে পেলেন বাবু?
আমি বলিলাম, না।
আমার এই সংক্ষিপ্ত উত্তরে রতন ক্ষুব্ধ হইয়া কহিল, আমরা যাওয়ায় আপনি কি রাগ করেচেন বাবু? মার কান্না দেখলে কিন্তু—
আমি তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলাম, না রতন, আমি একটুও রাগ করিনি।
তাঁবুর কাছাকাছি আসিয়া চৌকিদার তাহার কাজে চলিয়া গেল। গণেশ ছট্টুলাল চাকরদের তাঁবুতে প্রস্থান করিল। রতন কহিল, মা বলেছিলেন, যাবার সময় একটিবার দেখা দিয়ে যেতে।
থমকিয়া দাঁড়াইলাম। চোখের উপর যেন স্পষ্ট দেখিতে পাইলাম,