নিশ্চয়।
তা হ’লে আমার জন্যই প্রাণটা ফিরে পেয়েছ বল?
তাতে আমার কোন সন্দেহ নেই।
তা হ’লে ওটা দাবি করতে পারি বল?
তা পারো। কিন্তু আমার প্রাণটা এত তুচ্ছ যে, তার পরে তোমার লোভ হওয়াই উচিত নয়।
পিয়ারী এতক্ষণ পরে একটু হাসিয়া বলিল, তবু ভাল যে নিজের দামটা এতদিনে টের পেয়েচ। কিন্তু পরক্ষণেই গম্ভীর হইয়া কহিল, তামাসা থাক্—অসুখ ত একরকম ভাল হ’ল, এখন যাবে কবে মনে কর্চ?
তাহার প্রশ্ন ঠিক বুঝিতে পারিলাম না। গম্ভীর হইয়া কহিলাম, কোথাও যাবার ত আমার এখন তাড়া নেই। তাই আরও কিছুদিন থাক্ব ভাব্চি।
পিয়ারী কহিল, কিন্তু আমার ছেলে প্রায়ই আজকাল বাঁকিপুর থেকে আস্চে। বেশিদিন থাক্লে সে হয়ত কিছু ভাবতে পারে।
আমি বলিলাম, ভাবলেই বা। তাকে ত তোমার ভয় ক’রে চল্তে হয় না। এমন আরাম ছেড়ে শীঘ্র কোথাও নড়চিনে।
পিয়ারী বিরস-মুখে বলিল, তা কি হয়! বলিয়া হঠাৎ উঠিয়া গেল।
পরদিন বিকাল-বেলায় আমার ঘরের পশ্চিম দিকের বারান্দায় একটা ইজি-চেয়ারে শুইয়া সূর্য্যাস্ত দেখিতেছিলাম, বঙ্কু আসিয়া উপস্থিত হইল। এতদিন তাহার সহিত ভাল করিয়া আলাপ করিবার সুযোগ হয় নাই। একটা চেয়ারে বসিতে ইঙ্গিত করিয়া বলিলাম, বঙ্কু, কি পড় তুমি?
ছেলেটি অতিশয় শাদা-সিধা ভালমানুষ। কহিল, গতবৎসর আমি এণ্ট্রান্স পাশ করেছি।
এখন তা হ’লে বাঁকিপুর কলেজে পড়চ ত?