বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীগৌর উপদেশামৃত । V শ্ৰীবাসের কথা শুনিয়া প্ৰভু মৃদু হাসিয়া অথচ কপট গাম্ভীৰ্য্য রক্ষা করিয়া কহিলেন “-শুনহ। পণ্ডিত ! তোমার কৃপায় সেহী হইব নিশ্চিত ॥” চৈঃ ভাঃ ৷৷ ৩৬ ৷৷ এই বলিয়া প্ৰভু শিষ্যগণের সহিত সুরধুনীতীরে গিয়া উপবেশন করিলেন এবং শাস্ত্ৰালাপে নিমগ্ন হইলেন । প্রভুর অসাধারণ ব্যাখ্যাশক্তি দর্শনে নবদ্বীপের বৃহস্পতি-কল্প পণ্ডিতগণ ভাবিতেন,-“নিমাই পণ্ডিত কখনই মনুষ্য নয়, এত তেজ মানুষে সম্ভাবে না।” কিন্তু প্ৰভু সেই সকল অধ্যাপকগণের প্রতি কটাক্ষ করিয়া বলিতেন,— “-তারে অ্যামি বলিয়ে পণ্ডিত । একবার ব্যাখ্যা করে আমার সহিত ৷ সেই বাক্য বাখানিয়ে যদি আরবার । আমা প্ৰবোধিব হেন দেখি শক্তি কর।” চৈঃ ভাঃ ৷৷ ৩৭ ৷৷

  • যে ব্যক্তি আমার সহিত একবার মাত্ৰ শাস্ত্ৰ ব্যাখ্যা করিতে সাহসী হইবেন, আমি যাহা ব্যাখ্যা করিব তাহা খণ্ডন করিয়া আমাকে বুঝাইতে পরিবেন, আমি ভঁাহাকেই পণ্ডিত বলি। কই, এরূপ শক্তি কাহার আছে । দেখি ?”

তখন শ্ৰীনবদ্বীপের পণ্ডিতবর্গ বিদ্যামদে এরূপ প্ৰমত্ত যে, তঁাহারা কেবল বিদ্যার্জন ও বিদ্যানুশীলনকেই জীবনের সারধৰ্ম্ম মনে করিতেন । এই পণ্ডিতস্মান্য অধ্যাপকগণের সৰ্ব্ব-গৰ্ব্ব চুৰ্ণ করিবার জন্যই শ্ৰীপ্রভুর এই তেজোব্যঞ্জক অহঙ্কার প্রকাশ । একেই তো শ্ৰীভগবানকে দেখিলে স্বভাবতঃই সকলের হৃদয়ে ভীতির সঞ্চার হইয়া থাকে, তাহাতে এইরূপ সগৰ্ব্ব বাক্যে জ্ঞানবৃদ্ধ সুপণ্ডিতগণও শ্রীপ্রভুর সহিত বিদ্যা-বিচারে সাহসী হয়েন না। হেন সে সাধ্বসজন্মে প্ৰভুরে দেখিয়া । সভেই যায়েন একদিকে নম্র হৈয়া ৷ দয়াল প্ৰভু স্বীয় কৃপাশক্তি প্রেরণায় এইরূপে গৰ্ব্বিত পণ্ডিতগণের হৃদয় অভিমানশূন্য করিয়া চিত্তে দৈন্য-বিনয়ের ভাব-কুসুম ফুটাইলেন, কেবল ভক্তির মধু-ধারায় তঁহদের সেই নীরস প্রাণকে সরাস-মধুর করিবার নিমিত্ত