বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y & 8 রাজমালা । { দ্বিতীয় সমক্ষে উপস্থিত করিবার কালে যে বেশবিদ্যাস করা হইয়াছিল তাহাতে পাওয়t যায়,— “হৃদিমাঝে শোভে তার বিচিত্র কাচলি । মুকুতার হার উপরে করিছে ঝলমলি ॥” কৃত্তিবাস । দ্বিজবংশী দাস প্রভৃতি অনেক প্রাচীন কবিই কঁচিলির উল্লেখ করিয়াছেন। সেকালে এই বস্ত্রের কারুকার্য্য বিশেষ প্রসিদ্ধ ছিল, এবং শিল্পিগণ ইহাতে শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শন জন্য বিশেষ যত্নবান থাকিতেন। কবি রূপরামের ধৰ্ম্মরাজের গীত হইতে কিঞ্চিৎ দৃষ্টান্ত প্রদান করা যাইতেছে — “কাচলির সম্মুখেতে পূর্ণরাস লেখা । মাধবেরে গোপিনী যেখানে দিল দেখা ; সরি সারি শোভা পায় ষোল শ গোপিনী । তার মধ্যে দণ্ডাএ আছেন চক্রপানি ॥ 米 杀 紫 杀 পুর্ণরসে লিখিল সম্মুখে দান খণ্ড । ভাঙ্গানায় রাধাকাণু তরঙ্গ নিখণ্ড ॥” ইত্যাদি । রূপরামের ধৰ্ম্মরাজের গীত । এইরূপ অক্ৰুর সংবাদ, রাসলীলা, দানকেলী, দেবীযুদ্ধ, রাম-রাবণের যুদ্ধ প্রভৃতি নানাবিধ দেবদেবীর চিত্র এবং পশু পক্ষী প্রভৃতির চিত্রদ্বারা কঁচলির শোভা বৰ্দ্ধন করা হইত। ত্রিপুরা রাজ্যে প্রচলিত রিয়া বা কঁচলি দেখিলে বুঝা যাইবে, এই রাজ্যেও কঁচলির বয়ন কাৰ্য্যে সম্পূর্ণভাবে প্রাচীন আদর্শ রক্ষিত হইয়াছে। ইহার শিল্প নৈপুণ্য প্রদর্শন জন্য কয়েকখানা র্কাচলির চিত্র দেওয়া যাইতেছে। উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ইহার সমস্তই রাজপরিবারস্থ মহিলাগণের দ্বারা বয়িত। শিল্প কাৰ্য্যগুলি বুনটে করা হইয়াছে, ইহা ছুচের কাজ নহে। ত্রিপুরার রেশমের কারখানা এবং রেশমী বস্ত্র এক সময় প্রসিদ্ধ ছিল। তাহা প্রধানতঃ চীন দেশে রপ্তানী হইত। সেই দেশের সহিত ত্রিপুরার বিনিময় বাণিজ্য প্রচলিত ছিল । ত্রিপুরার বয়ন এবং সীবন শিল্প মহিলাগণের করণীয়। স্মরণাতীতকাল হইতে Park announ, এই প্রথা চলিয়া আসিতেছে। রাজমালা আলোচনা করিলে জানা করণীয় । যাইবে, কলির প্রারম্ভকাল হইতে (ত্রিপুরায় শিল্প কলার প্রবর্তৃক মহারাজ ত্রিলোচনের সময় হইতে) বর্তমানকাল পর্য্যন্ত এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে নাই। কেবল ত্রিপুরায় নহে—সমগ্র ভারতেই বৈদিককাল হইতে সূত্র প্রস্তুত এবং বস্ত্র বয়ন মহিলাগণের কৰ্ত্তব্য ছিল। ঋগ্বেদের ২য়, ৬ষ্ঠ ও ১০ম মণ্ডলে এ বিষয়েৰু উল্লেখ পাওয়া যায়।