বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जश्द्र ] I ነ भ६)-मनि । RS)● অতঃপর রাঙ্গিয়া ভূতুয়ার সন্ধানে বহির্গত হইয়া বহু অনুসন্ধানের পর একস্থানে দেখিতে পাইল একটী গৰ্ত্ত হইতে পিপীলিকা প্রবাহ উথিত হইতেছে এবং গৰ্ত্তের পাশ্ববৰ্ত্তী শুষ্ক পত্রের উপর কয়েক ফোট রক্ত রহিয়াছে। তদর্শনে তাহার সন্দেহ হওয়ায় সেই স্থান খনন করিতে প্রবৃত্ত হইল। দুই হস্ত পরিমিত গভীর গৰ্ত্ত খননের পর তন্মধ্যে এক খণ্ড জিহবা পাওয়া গেল। রাঙ্গিয়া বুঝিল, ইহা ভূতুয়ার জিহা, রাক্ষসী কৰ্ত্তন করিয়া পুতিয়া রাখিয়াছে। অনেক অনুসন্ধানের পর ঝোপের ভিতর ভূতুয়াকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া গেল। এবং সযত্ন শুশ্রুষায় ভূতুয়া সচেতন হইল। কিন্তু তাহার বাক্য উচ্চারণের শক্তি নাই। তখন রাঙ্গিয়া কর্তিত জিহবা খণ্ড হস্তে লইয়া বলিল,—“যদি সত্য সত্যই আমি দেব ঔরসে জন্মগ্রহণ করিয়া থাকি, তবে কখনও আমার বাক্য ব্যর্থ হইবে না। ভূতুয়ার কর্তিত জিহব নিশ্চয়ই পূর্ববৎ জোড়া লাগিবে। আর এই উপাখ্যান চিরপ্রসিদ্ধ হইয়া থাকিবে । রুগ্ন, বিকলাঙ্গ প্রভৃতি যে কোন ব্যক্তি এই উপাখ্যান বলিয়া দেবতার পূজা করিলে, সে নিশ্চই আরোগ্য লাভ করিবে ।” এই বলিয়া সে চন্দ্র সূৰ্য্য সাক্ষী করিয়া ভূতুয়ার জিহবা তাম্বার মুখস্থিত অংশের সহিত সংযোগ করিল, অমনি সেই খণ্ডিত জিহবা জোড়া লাগিয়া পূর্বের স্থায় স্বাভাবিক অবস্থা প্রাপ্ত হইল। ভূতুয় তাহার দুৰ্গতির সমগ্র বিবরণ রাঙ্গিয়ার নিকট ব্যক্ত করিল এবং একটা খাগড়া বেীপের প্রতি অঙ্গুলী নির্দেশ করিয়া বলিল,—“এই বেীপের ভিতর একটা সুরঙ্গ আছে, রাক্ষসীকে সেই স্থরঙ্গের ভিতর প্রবেশ করিতে আমি দেখিয়াছি।” তখন রাঙ্গিয়া ভূতুয়াকে বলিল,— “আমাকে রাজকুমারীর সন্ধানে যাইতে হইবে। তুমি এইস্থানে আমার প্রতীক্ষায় খাক, আমি ফিরিয়া না আসা পর্য্যন্ত কোথাও যাইও না। এখন আর তোমার কোনরূপঃ আশঙ্কার কারণ নাই ।” অতঃপর রাঙ্গিয়া খাগড়া কোপ উৎপাটন করিয়া দেখিল একটা বৃহৎ সুরঙ্গ বিদ্যমান রহিয়াছে। এবং পাতাল হইতে একটা ঘিলালত উঠিয়া সুরঙ্গের পার্শ্ববর্তী একটা বৃক্ষকে বেষ্টন করিয়া ধরিয়াছে। ঐ লতা অবলম্বন করিয়াই রাক্ষসী স্বরঙ্গ পথে যাতায়াড় করিত। রাঙ্গিয়া সেই লতা ধরিয়া স্বরঙ্গে প্রবেশ করিল। কিয়দুর নিম্ন গমনের পর সে দেখিতে পাইল, অট্টালিকাময় এক সমৃদ্ধ পুরী বিদ্যমান রহিয়াছে। স্থসজ্জিত উদ্যান, স্বচ্ছসলিল সরোবর, গগনস্পর্শ অট্টালিকা দর্শনে সে বুঝিল ইহা একটা স্ববৃহৎ রাজপুরী। রঙ্গিয়া প্রাসাদোপম অট্টালিকায় প্রবেশ করিয়া প্রত্যেক প্রকোষ্ঠে বেড়াইল, কোথাও মনুষের দর্শন পাইল না। পরিশেষে একটা প্রকোষ্ঠে যাই দেখিল এক পরমাসুন্দরী যুবতী একাকিনী পালঙ্কে বসিয়া ব্যাকুলভাবে রোদন করিতেছে। তখন রাঙ্গিয় ধীরে ধীরে যুবতীর সম্মুখীন হইয়৷ জিজ্ঞাসা করিল “সরলে, তুমি কে ? এবং কেনই বা এই জন মানব হীন পাতাল পুীতে একাকিনী বলিয়া রোদন করিতেছ?” অকস্মাৎ মনুষের আগমন দর্শনে যুবতী চমকিতা ও আশ্বস্ত হইল। সে দুইহাতে অশ্রু মার্জন করিয়া বীণা-মধুর ।