পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লহর ] মধ্য মণি । ২৭৭ খামাচেব ;–(২০ পৃঃ–১৪ পংক্তি )। বড়বক্র নদীর দক্ষিণ ও চাথেং নদীর উত্তরস্থিত ভূভাগ প্রাচীন কালে পূর্বকুল’ নামে অভিহিত হইত। লঙ্গাই উপত্যকাও এই প্রদেশের অন্তর্ববৰ্ত্তী ছিল । ইহা কুকি প্রদেশ। খামাচেব সম্প্রদায়ের কুকিগণ এই প্রদেশের যে স্থানে বাস করিত, সেই স্থান ‘খামাচেব’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। এই স্থান বর্তমান সময়ে বৃটিশ রাজ্যের অন্তভূত হইয়াছে। খামারাখল ;–(২• পৃঃ—১৫ পংক্তি)। এই স্থান পূর্বকুলের অন্তর্নিবিষ্ট, ছাতচুড়া পর্বতের পূর্বদিকে হিঙ্গলাছড়ার পূর্বপাড়ে অবস্থিত। বৰ্ত্তমান কালেও এখানে রাজ্জ্বল সম্প্রদায়ের কুকি জাতি বাস করিতেছে । খাসিয়া ;–( ৪৩ পৃঃ—২৪ পক্তি ) ৷ ইহা একটা স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল । এই প্রদেশ ব্রহ্মপুত্র ও সুর্খা নদীর মধ্যভাগে অবস্থিত । খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর তৃতীয়পদে এই প্রদেশের রাজা বিজয়মণিক্যের অবিমূৰ্য্যকারিতার দরুণ ত্রিপুরেশ্বর বিজয়মাণিক্য এই রাজ্য আক্রমণ করেন। হেড়ম্বেরশ্বর নির্ভয়নারায়ণের মধ্যবৰ্ত্তিতায় এই বিবাদের শান্তি হইয়াছিল । ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী বঙ্গদেশের দেওয়ানী পাইবার সময় হইতেই ইংরেজ কোম্পানীর শ্ৰীহট্ট প্রভৃতি প্রদেশের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পতিত হয়। ইহারা প্রথমতঃ চুণ ও কমললেবুর ব্যবসা আরম্ভ করেন এবং উত্তরোত্তর প্রাধান্ত বিস্তারের চেষ্টা করায় ১৮২৯ খৃঃ অব্দের এপ্রিল মাসে খাসিয়াগণ ইহাদিগকে আক্রমণ করে এবং দীর্ঘকাল যুদ্ধের পর খাসিয়া প্রদেশ সম্পূর্ণরূপে ইংরেজের হস্তগত হয়। বর্তমান সময়ে পৰ্যর্বত্য প্রদেশের কিয়দংশ খাসিয়া সরদারগণ কর্তৃক এবং অবশিষ্টাংশ বৃটিশ গবর্ণমেণ্ট কর্তৃক শাসিত হইতেছে। গঙ্গানগর ;–(২৫ পৃঃ—২৪ পংক্তি )। এই স্থান উদয়পুর ও অমরপুরের মধ্যবৰ্ত্তী স্থানে গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত । গঙ্গামণ্ডল ;–(১৩ পৃঃ,—২ পংক্তি) । ইহা ত্রিপুর জেলার একটা সুবৃহৎ পরগণা। এই ভূ-ভাগ মুসলমান সাম্রাজ্য কালে ত্রিপুর রাজ্যের কুক্ষিচ্যুত হইয়া, স্বতন্ত্র জমিদারী স্বত্বে পরিণত হইয়াছে। প্রথমতঃ বরদাখাতের জমিদার আকাসাদেক ১৬,৩৮৯ টাকা রাজস্ব অবধারণে এই স্থানের বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন । তৎপর শোভাবাজারের রাজা নবকৃষ্ণ বাহাদুর খরিদসূত্রে ইহার অধিকারী হইয়াছেন । গোমতী ;–(২২ পৃঃ—২৪ পংক্তি)। ইহা একটা নদী। এই নদী, আঠারমুড়া পর্বতজাত ছাইমা নদী এবং লংতরাই পৰ্ব্বতোৎপন্ন রাইমা নদীর সহযোগে উৎপন্ন হইয়া, ডুমুর নামক জলপ্রপাত হইতে নির্গত হইয়াছে। ত্রিপুরার প্রাচীন রাজধানী অমরপুর ও উদয়পুর এবং সোণামুড়া ও কুমিল্লানগরী এই নদীর তীরে অবস্থিত ।