বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শ্রীরাজমালা (দ্বিতীয় লহর) - কালীপ্রসন্ন সেন বিদ্যাভূষণ.pdf/৫১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

w) o o রাজমালা । { দ্বিতীয় আছে (৪র্থ সর্গ—৩৫-৩৮ শ্লোক)। মহারাজ বল্লাল সেন তাহার রাজ্যকে পাঁচ ভাগে বিভক্ত করিবার কালেও এক ভাগ বঙ্গ নামে অভিহিত ছিল । * মুসলমান রাজত্বকালে এতদেশ ‘বাঙ্গালা’ নাম লাভ করে। আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে উক্ত হইয়াছে, পূর্বকালের রাজগণ জলপ্লাবন নিবারণার্থ দশ হস্ত পরিমিত উচ্চ এবং বিশ হস্ত প্রশস্ত এক একটী তাল বাধিয়াছিলেন । এই কারণে “বঙ্গ-অল’ শব্দদ্বয়ের যোগে ‘বাঙ্গাল’ এবং বাঙ্গল হইতে ‘বাঙ্গালা’ নাম হইয়াছে । হিন্দু এবং মুসলমান শাসনকালে বঙ্গদেশে রাজধানী সংস্থাপিত ছিল । বিদ্যা এবং জ্ঞানের নিমিত্ত বঙ্গদেশ চির প্রসিদ্ধ। প্রাচীন বঙ্গের সমৃদ্ধির ইয়ত্তা ছিল না । কৃষি, শিল্প এবং বাণিজ্যদ্বারা বঙ্গদেশ যে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল, তাহা অতুলনীয়। সেই সকল বিবরণ অল্প কথায় প্রদান করা সম্ভবপর নহে । বরদাখাত –(১৩ পৃঃ—৫ পংক্তি)। ইহা ত্রিপুর জেলার একটা স্ববৃহৎ পরগণা। পূর্বে ত্রিপুর রাজ্যের অন্তর্নিবিষ্ট ছিল । মোগল রাজত্বকালে ইহ নেজামত (সামরিক ) বিভাগ ভুক্ত হয়। বরদাখাত ও সরাইল পরগণার জমিদারগণ সামরিক বিভাগের নিমিত্ত নির্দিষ্ট সংখ্যক কোষ নৌকা প্রদান করিতে বাধ্য ছিলেন । এতদ্ব্যতীত উক্ত উভয় পরগণার সম্যক আয় সমরতরী বিভাগে ব্যয় হইত, এজস্য ইহা ‘মাওরা মহল’ নামে অভিহিত হইত । মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে বরদখাত পরগণা ঈশা খাঁ মসনন্দ আলীর শাসনাধীন ছিল, তখন ইহার নাম ছিল বলদখল। দ্বিতীয় আলমগীরের (ঔরঙ্গজেব) শাসনকালে (৪৪ জলুসে–১৭০০ খৃঃ) বাঙ্গালার নবাব আজিম ওসমানের এক খণ্ড পরওয়ানাদ্বারা জানা গিয়াছে, তৎকালে এই পরগণা ঈশা খ এর উত্তর পুরুষ দেওয়ান হয়বৎ মাহম্মদ খা এর হস্তে ছিল । ল’ ইহার পর নানা ব্যক্তির হাত ঘুরিয়া মির্জা মহম্মদ ইব্রাহিমের হস্তগত হয়। তিনি অপুত্রক অবস্থায় পরলোক প্রাপ্ত হওয়ায়, তাহার তিন কস্যার মধ্যে সম্পত্তি তুল্যাংশে বিভক্ত হইয়াছিল । র্তাহার কনিষ্ঠা কন্যার স্বামী মির্জা হোশন আলী কালীর উপাসক ছিলেন। তাহার রচিত শ্যামা-সঙ্গীত বর্তমানকালেও সচরাচর গীত হইয়া থাকে । অতঃপর খরিদসূত্রে অনেকেই এই পরগণার অংশবিশেষের অধিকারী হইয়াছেন। তন্মধ্যে শ্যামগ্রাম নিবাসী ব্রাহ্মণ জাতীয় মহেশনারায়ণ রায়, ঢাকা নিবাসী আমিরদীন দারোগ এবং ঢাকার নবাববংশের পূর্বপুরুষ খাজে আলী মিঞার নাম উল্লেখযোগ্য । বৰ্ত্তমানকালে উক্ত নবাব পরিবারই এই পরগণার অধিকাংশের অধিকারী । ত্রিপুরেশ্বর ধন্যমাণিক্যের শাসনকালে এই পরগণা গৌড়েশ্বরের হস্ত হইতে কাড়িয়া লওয়া হইয়াছিল । বরদাখাতের তদানীন্তন জমিদার প্রতাপ রায়

  • Vide Buchanon Hamilton's Hindusthan—Vol, I, P. 1 14. t J. A. S. B.-Vol. XLIII, Part I, P, 214.