পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত প্রথম ভাগ.djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ । [ গৃহস্থাশ্রমকথাপ্রসঙ্গে। ] শ্ৰীযুক্ত মহিমাচরণাদি ভক্তেরা বসিয়া ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের হরিকথামৃত পান করিতেছেন। কথাগুলি যেন বিবিধ বর্ণের মণিরত্ন, যে যত পারেন কুড়াইতেছেন–কিন্তু কোচড় পরিপূর্ণ হয়েছে, এত ভার বোধ হচ্চে যে উঠা যায় না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আধার,আর ধারণা হয় না। স্বষ্টি হইতে এ পর্য্যন্ত যত বিষয়ে মানুষের হৃদয়ে যত রকম সমস্ত উদয় হয়েছে—সব সমস্ত পুরণ হইতেছে। পদ্মলোচন, নারায়ণ শাস্ত্রী, গৌরী পণ্ডিত, দয়ানন্দ সরস্বতী ইত্যাদি শাস্ত্ৰবিং পণ্ডিতের অবাক হয়েছেন। দয়ানন্দ, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে যখন দর্শন করেন ও যখন তাহার সমাধি অবস্থা দেখিলেন, তখন আক্ষেপ করেছিলেন। বলেছিলেন, আমরা এত বেদ বেদান্ত কেবল পড়েছি, কিন্তু এই মহাপুরুষে তাহার ফল দেখিতেছি ; এ কে দেখে প্রমাণ হ’ল যে পণ্ডিতেরা কেবল শাস্ত্র মন্থন করে ঘোলটা খান, আর এরূপ মহাপুরুষের মাথনট সমস্ত খান। আবার ইংরাজী : পড়া কেশবচন্দ্র সেনাদি পণ্ডিতেরাও ঠাকুরকে দেখে অবাক হয়েছেন!—কি আশ্চৰ্য্য, নিরক্ষর ব্যক্তি এ সব কথা কিরূপে বলছেন ! এ যে ঠিক যীশুখ্রষ্টের মত কথা ! গ্রাম্যভাষা ! সেই গল্প ক’রে করে বুঝান-যাতে পুরুষ স্ত্রী ছেলে সকলে অনায়াসে বুঝিতে পারে। যীশু, Father (পিতা) Father (পিতা ) করে পাগল হ’য়েছিলেন, ইনি মা মা ক’রে পাগল । শুধু জ্ঞানের অক্ষয় ভাণ্ডার নহে,—ঈশ্বর প্রেম কলসে কলসে ঢালে, তবু না ফুরায়। ইনিও যীশুর মত ত্যাগী, তাহারই মত ইহারও জলন্ত বিশ্বাস। তাই কথাগুলির এত জোর । সংসারী লোক বল্পে তো এত জোর হয় না ; কেন না, তারা ত্যাগী নয়, তাদের জলন্ত বিশ্বাস কই ? কেশব সেনাদি পণ্ডিতেরা আরো ভাবেন,—এই নিরক্ষর লোকের এত উদার ভাব কেমন ক’রে হ’ল ! কি আশ্চৰ্য্য ! কোনরূপ বিদ্বেষভাব নাই ! সব ধৰ্ম্মাবলম্বীদের আদর করেন—কাহারও সহিত ঝগড়া নাই। * - আজ মহিমাচরণের সহিত ঠাকুরের কথাবার্তা শুনিয়া কোন ভক্ত ভাবছেন, ঠাকুর তো সংসার ত্যাগ করতে বল্লেন নী—বরং বলছেন, সংসার