মনে ত কোন পাপ স্পর্শ করে নাই, তা ত তুই জানিস্, তবে এত কাতর হচ্চিস্ কেন? লোকে কত কথা বল্বে, কেমন? আমি তার ব্যবস্থা করেছি। আমি তোকে আর তোর মেয়েকে দেবীপুরে নিয়ে যাব। তুই সেখানে আমার মেয়ের মত থাক্বি; আমি তোকে কোলে করে রাখব; তোকে আমার সংসারের কর্ত্রী করে রাখব। কেউ তোকে ঘৃণা করতে পারবে না। তোর মেয়ের বিয়ে যাতে সুপাত্রের সঙ্গে হয়, আমি তা করব। তোকে এ দেশে থাক্তে হবে না;–এ মুখুয্যে-বাড়ী আর তোকে আস্তে হবে না,—এদের মুখ তোকে দেখ্তে হবে না। এর জন্য যত কিছু সহ্য করতে হয়, আমি করব। কা’ল সকালেই তোদের নিয়ে আমি দেবীপুরে চলে যাব।”
মানদা অবাক হইয়া রমামুন্দরীর মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন। তিনি নিজের কর্ণকে বিশ্বাস করিতে পারিলেন না; পাগলিনীর মত তাঁহার শূন্যদৃষ্টি!
রমাসুন্দরী বুঝিতে পারিলেন, মানদা তাঁহার কথার মর্ম্মগ্রহণ করিতে পারেন নাই, তাঁহার বুদ্ধি এখন প্রকৃতিস্থ নহে। তিনি বলিলেন “মানদা, আমি যা বললাম, শুন্তে পেয়েছিস্?”
মানদা অন্যমনস্ক ভাবে বলিলেন “হ্যাঁ—তা—হ্যাঁ কি বলছ?”
রমাসুন্দরী বলিলেন “কা’ল সকালে আমি তোদের দেবীপুরে নিয়ে যাব, বুঝলি?”
মানদা তেমনই ভাবে বলিলেন “আমাদের-দেবীপুরে! কেন? সে কোথায়? দেবীপুরে? কেন? এ যে আমার সুবর্ণপুর।