পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
সোনার তরী

আসে গুটি গুটি বৈয়াকরণ
ধূলিভরা দুটি লইয়া চরণ
চিহ্নিত করি রাজাস্তরণ
পবিত্র পদপঙ্কে।
ললাটে বিন্দু বিন্দু ঘর্ম,
বলি-অঙ্কিত শিথিল চর্ম,
প্রথরমূর্তি অগ্নিশর্ম—
ছাত্র মরে আতঙ্কে।
কোনো দিকে কোনো লক্ষ না ক’রে
পড়ি গেল শ্লোক বিকট হাঁ ক’রে,
মটর কড়াই মিশায়ে কাঁকরে
চিবাইল যেন দাঁতে।
কেহ তার নাহি বুঝে আগুপিছু,
সবে বসি থাকে মাথা করি নিচু;
রাজা বলে, ‘এঁরে দক্ষিণ কিছু
দাও দক্ষিণ হাতে।’
তার পরে এল গনৎকার,
গণনায় রাজা চমৎকার,
টাকা ঝন্ ঝন্ ঝনৎকার
বাজায়ে সে গেল চলি।
আসে এক বুড়া গণ্যমান্য
করপুটে লয়ে দূর্বাধান্য,
রাজা তাঁর প্রতি অতি বদান্য
ভরিয়া দিলেন থলি।
আসে নট ভাট রাজপুরোহিত—
কেহ একা কেহ শিষ্য-সহিত,
কারো বা মাথায় পাগড়ি লোহিত
কারো বা হরিৎবর্ণ।