কোথায় আলো, কোথায় মাল্য, কোথায় আয়োজন!
রাজা আমার দেশে এল, কোথায় সিংহাসন!
হায় রে ভাগ্য, হায় রে লজ্জা, কোথায় সভা, কোথায় সজ্জা!
দুয়েক জনে কহে কানে, ‘বৃথা এ ক্রন্দন,
রিক্তকরে শূন্য ঘরে করো অভ্যর্থন।’
ওরে দুয়ার খুলে দে রে, বাজা শঙ্খ বাজা—
গভীর রাতে এসেছে আজ আঁধার ঘরের রাজা।
বজ্র ডাকে শূন্যতলে, বিদ্যুতেরই ঝিলিক ঝলে,
ছিন্ন শয়ন টেনে এনে আঙিনা তোর সাজা—
ঝড়ের সাথে হঠাৎ এল দুঃখরাতের রাজা।
২ শ্রাবণ ১৩১২
দান
ভেবেছিলাম চেয়ে নেব, চাই নি সাহস করে—
সন্ধেবেলায় যে মালাটি গলায় ছিলে প’রে
আমি চাই নি সাহস করে।
ভেবেছিলাম সকাল হলে যখন পারে যাবে চলে
ছিন্ন মালা শয্যাতলে রইবে বুঝি পড়ে।
তাই আমি কাঙালের মতো এসেছিলেম ভোরে,
তবু চাই নি সাহস করে।
এ তো মালা নয় গো, এ যে তোমার তরবারি।
জ্বলে ওঠে আগুন যেন, বজ্র-হেন ভারী,
এ যে তোমার তরবারি।
তরুণ আলো জানলা বেয়ে পড়ল তোমার শয়ন ছেয়ে,
ভোরের পাখি শুধায় গেয়ে ‘কী পেলি তুই নারী।’
নয় এ মালা, নয় এ থালা, গন্ধজলের ঝারি—
এ যে ভীষণ তরবারি।