পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, নবম সংখ্যা 向°C歌平電 অথচ, নরেন যে বিয়ে করতে একেবারেই অনিচ্ছক ভাও বলা যায় না। আসল কথা তার মনে ভয় ছিল পাছে তার গল্পের যুগের অবসান হয়ে কাজের পাল উপস্থিত হয়। কাল কিন্তু কারও অপেক্ষা রাখে না। দুবৎসর জলের মত কেটে গেল। এম, এ পাসের পর এক “প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ” না পড়লে ত আর পড়ার অছিলায় বিয়ের কথা উড়িয়ে দেওয়া চলে না। সেটার চেষ্টাও নরেনের পক্ষে একপ্রকার বিড়ম্বনামাত্র ; কারণ, সে কোনো কালেই পরীক্ষায় প্রথম হতে পারে নি। বরং একবার তার নামটা গেজেটের ওপর, দিক দিয়ে টপকে বেরিয়ে গিয়েছিল। নরেনের ভাষায়, নামটী সাতরঙে ছাপাতে গিয়ে ছাপার ভুলে রঙ সাতটী মিশে গেজেটের কাগজের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গিয়েছিল। অগতির গতি ল' কলেজে পড়লেও বিবাহে অমত করা মুকিল; কারণ, ল’ কলেজের ঢের ছাত্রেরই তা স্ত্রীপুত্ৰ বৰ্ত্তমান। এমন কি দু' চার জনের মেয়ের বিয়ে দেবারও সময় হয়েছে ; সেই উদ্দেশ্যেই তা ল’ কলেজে তাদের আগমন । সঙ্গতিপন্ন হলেও চুপ করে বসে থাকাটা যুবকের পক্ষে অনুচিত, এই বিবেচনা করে নরেনের পিতা তাকে ল’ কলেজেই ভৰ্ত্তি করলেন। ফলে, নরেনের জ্যাঠামীর প্রকোপ বেড়ে উঠল। দু’চারদিন হাইকোর্টে গিয়ে স্বচক্ষে দেখলে ও স্বকৰ্ণে শুনলে যে উকিল ব্যারিষ্টারদের প্রধান সহায় আইন নয়, জ্যাঠামী, অন্তত নরেনের তাই মত। এদিকে নরেনের বিবাহের প্রস্তাবও নানান তরফ থেকে আসতে লাগল। ছেলেটীি লেখাপড়া জানে, ঘরও ভাল, চালাক চতুর, দেখতেও মই, দু’পয়সার সংস্থান ও আছে, এতগুলির সমন্বয় তা সহজে মেলে