বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৭২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় বর্ষ, দ্বাদশ সংখ্যা পূর্ববঙ্গবাসীর উক্তি o আবু, আমাদের কথ্য-ভাষা নয়, আমরা তার প্রচলনে কেন সহায় হব ? কিন্তু তারা যদি একটু ভেবে দেখেন, তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন । আমাদের পূর্ববঙ্গবাসীদের কাছে লেখ্য-ভাষা ও কথ্যভাষা। এ দুয়ের কোনটিই নিজের মুখের ভাষা নয়, আর মুখের ভাষাই যে মুখ্য-ভাষা তা কে না জানে ? সে মুখ্য-ভাষা এখনো যখন আমাদের মুখে ছাড়া অন্য কোথাও নেই, তখন লেখায় কেন আমরা একটা ছেড়ে আর একটা ধরতে আপত্তি করব ? লেখায় কলকাতার কথ্যভাষা চল হলে আমাদের অনেক বিষয়ে সুবিধাও হবে, লাভও হবে। কারণ ঔখন আমাদের কথার উপরেও কলকাতার ভাষার প্রভাব অনেকটা ছড়িয়ে পড়বে। * সচরাচরই দেখা যায় কলকাতায় যাঁরা দু এক বছর বাস করেছেন, তঁাদের কথাও অনেকটা বদলে গেছে। লেখ্য-ভাষা কলকাতাই হলে পূর্ববাংলার নিতান্ত পাড়া গেয়ে লোকেরাও কলকাতার ভাষা সহজে বুঝতে ও বলতে শিখবে । এবং সেটা যে তাদের বিশেষ দরকার, তা তারাও একদিন না একদিন ঠেকে স্বীকার করে। এখন দেখা যায়, তারা পাড়াগ ছেড়ে সহরে এলেই শিক্ষিত লোকের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে গিয়ে হী করে তাকিয়ে থাকে। কলকাতাই-ভাষা যদি লেখ্য ভাষারূপে ব্যবহৃত হয় তবে পূর্ববাংলার ভাষারও এ প্রাদেশিকতা থাকবে না। ক্রেমে পূর্ব ও পশ্চিমবাংলার লোকের ভাষা এক হয়ে যাবে; অন্ততঃ তফাৎটা অনেকু কমে যাবে এবং সে ফল যদি বাঞ্ছনীয় হয়-তবে কলকাতা পূর্ববঙ্গের কাছে না এলেও, পূর্ববঙ্গকে কলকাতার কাছে যেতে হবে । ইংরেজি আমাদের বিজাতীয় ভাষা, তবু আমাদের মধ্যে যারা ইংরেজি জানে, তারা কথা বলতে গেলেই প্রায় ইংরাজি কথা