বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সাধনা (প্রথম বর্ষ, প্রথম ভাগ).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্পত্তি সমৰ্পণ । ’ st বহুব্যয়সাধ্য এক ঔষধের ব্যবস্থা করাতে যজ্ঞনাথ তাহাতেই কবিরাজের অনভিজ্ঞতার পরিচয় পাইয়া তৎক্ষণাৎ তাহাকে বিদায় করিয়া দিলেন। বৃন্দাবন প্রথমে হাতে পায়ে ধরিল, তার পরে রাগারগি করিল, কিন্তু কোন ফল হইল না। পত্নীর মৃত্যু হইলে বীপকে স্ত্রীহত্যাকারী বলিয়া গাল দিল । বাপ বলিল, “কেন, ঔষধ খাইয়া কেহ মরে না ? দামী ঔষধ খাইলেই যদি বাচিত তবে রাজা বাদসারা মরে কোন ছঃখে! যেমন করিয়া তোর মা মরিয়াছে তোর দিদিমা মরিয়াছে তোর স্ত্রী তাহার চেয়ে কি বেশি ধুম করিয়া মরিবে ?” বাস্তবিক যদি শোকে অন্ধ না হইয়া বৃন্দাবন স্থির চিত্তে বিবেচনা করিয়া দেখিত তাহা হইলে এ কথায় অনেকট। সান্তনা পাইত । তাহার মা দিদিমা কেহই মরিবার সময় ঔষধ খান নাই । এ বাড়ির এইরূপ সনাতন প্রথা। কিন্তু আধুনিক লোকেরা প্রাচীন নিয়মে মরিতেও চায় না । যে সময়ের কথা বলিতেছি । তখন এদেশে ইংরাজের নূতন সমাগম হইয়াছে ; কিন্তু সে সময়েও তখনকার সেকালের লোক তখনকার একালের লোকের ব্যবহার দেখিয়া হতবুদ্ধি হইয়া অধিক করিয়া তামাক টানিত। যাহা হউক তখনকার নব্য বৃন্দাবন তখনকার প্রাচীন যজ্ঞনাথের সহিত বিবাদ করিয়া কহিল “আমি চলিলাম !” বাপ তাহাকে তৎক্ষণাৎ বাইতে অনুমতি করিয়া সৰ্ব্বসমক্ষে কছিলেন, বৃন্দাবনকে যদি তিনি কখনো এক পয়সা দেন তবে তাহ গোরক্তপাতের সহিত গণ্য হইবে। বৃন্দাবনও সৰ্ব্বসমক্ষে যজ্ঞনাথের ধন গ্রহণ মাতৃরক্তপাতের তুলাপাতক বলিয়া স্বীকার করিলেন । ইহার পর পিতাপুত্রে ছাড়াছড়ি হইয়া গেল ।