পাতা:সাহিত্য-রত্নাবলী - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানব-জীবন বিচার করিয়া দেখিলে দেখিতে পাইবে পশু পক্ষদিগেরও মানুষ্যের ন্যায় জ্ঞান, বিচার-শক্তি, প্ৰভৃতি সমস্তই, বিদ্যমান রহিয়াছে। তাহারা যে কেবল মাত্র ক্ষুধা, তৃষ্ণা, হৰ্ষ, বিষাদ প্রভৃতিরই অধীন তাহা নহে ; তাহাদের মধ্যেও জ্ঞান এবং বিচার-শক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। বিগত কয়েক বৎসর কাল পণ্ডিতগণ ইহাদের আচরণ ও কাৰ্য্যকলাপ পুঙ্খানুহপুঙ্খরূপে বিচার করিয়া ইহাদের জ্ঞানও বিচার শক্তির যথেষ্ট প্রমাণ প্ৰাপ্ত হইয়াছেন। কেবল তাহা নহে ; দয়া, পরোপকারপ্রবৃত্তি প্ৰভৃতি যে সব উন্নত ভাব মানব-জীবনে ধৰ্ম্মভাব নামে অভিহিত, তাহাও তাহাদিগের মধ্যে দেখিতে পাওয়া গিয়াছে । তাহাই যদি হইল, তবে মানুষ্যতে আর পশুপক্ষীতে প্ৰভেদ কি ? মানবের বিশেষত্ব তিনটি বিষয়ে রহিয়াছে ঃ প্ৰথম আধ্যাত্মিক আকাজক্ষা ; আমরা দেখিতে পাই যে ঈশ্বর মনুষ্য মাত্ৰকেই এই আশ্চৰ্য্য স্বভাব দিয়াছেন, যে মানব মন চারিদিকে নানাবিধ ভোগ-সুখের সামগ্ৰী দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকিয়াও তাহাতে তৃপ্ত নহে ; সৰ্ব্বদাই কি এক অদৃশ্য বিষয়ের জন্য লালায়িত । মানব যে দৃশ্যজগতে বাস করিতেছে তাহা ভুলিয়া গিয়া মনোময় রাজ্য গড়িয়া তাহার মধ্যে বাস করে এবং তাহার মধ্যেই নিজ সুখ দুঃখ স্থাপন করে। অদৃশ্য ও আধ্যাত্মিক সত্য সকলের চিন্তাতে এত ব্যাপৃত হইতে পারে যে দৈহিক সুখকে সুখ জ্ঞান করে না, বিপদকে বিপদ জ্ঞান করে না। যে সকল বিষয় ইন্দ্ৰিয়গ্ৰাহী নহে, কেবল আত্মার ভাবময় স্বষ্টি মাত্র, তাহাতেও