পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

কোনো কালেই মরতে পারব না এই দুঃখ অসহ্য হয়ে উঠল। সামান্য একটা দড়ি নিয়ে গলায় ফাঁস লাগাব এটুকু যোগ্যতাও রইল না।

 তুমি বললে, যা হবার তা তো হলো, এখন চলো আদালতে। জজ সাহেবকে ব’লে তোমার গাঁজার বরাদ্দ করে দেব।

 গেলে আদালতে। জজ সাহেব পাতুকে ধমক দিয়ে বললে, এ বুড়ি তোমার স্ত্রী কি না সত্যি ক’রে বলো।

 পাতু বললে, হজুর, সত্যি করে বলতে মন যায় না। কিন্তু ভদ্রলোকের ছেলে মিথ্যে ব’লে পাপ করব কেন। নিশ্চয় জানি যে, পাপের সঙ্গে সঙ্গে উনিই পিছন পিছন ছুটবেন। উনিই আমার প্রথম পক্ষের পরিবার।

 সাহেব জিগেস করলেন, আরো আছে না কি।

 পাতু বললে, না থাকলে মান রক্ষা হয় না যে, কুলীনের ছেলে। নৈকষ্যকুলীন।

 * * * * * 

 রবিবার দিনে পুপুদিদি পড়েছে গল্পটা। আমাকে জিগেস করলে-আচ্ছা দাদামশায়, তুমি যে লিখেছ এক রাশ ইংরেজি বই নিয়ে কোন্‌ কলেজের জন্যে বই লিখছ। তোমার আবার কলেজ কোথায়, তা ছাড়া কখনো তো দেখিনি ঐ রকমের বই খুলতে। তুমি তো লেখো কেবল ছড়া।

 স্পষ্ট জবাব না দিয়ে একটুখানি হাসলুম।

 আচ্ছা দাদামশায়; তুমি কি সংস্কৃত জানো।

 দেখো পুপুদিদি এরকম প্রশ্নগুলো বড়ো রূঢ়। মুখের সামনে জিগেস করতে নেই।



৮০