বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সোক্রাটীস (দ্বিতীয় খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় জীবন-ব্ৰত বিধাতা কোন সূত্র ধরিয়া সোক্রোটীসের জীবনগতি নির্ণিত কবিয়া দিলেন, তাহা উল্লিখিত হইল। এই সময় হইতে জীবনেব অবশিষ্ট প্ৰায় চল্লিশ বৎসর কাল ঈশ্বর ও মানবের সেবা ভিন্ন তাহাব ভাবিবাব ও করিবার আর কিছুই ছিল না। এক্ষণে তাঁহার এই জীবন-ব্রতের কথাই বলা যাইতেছে। কিন্তু তৎপূর্বে সংক্ষেপে বলিয়া রাখি, যে প্লেটোর সুকৌশলী তুলিকায় সেক্রিাটীসের যে জীবনালেখ্য চিত্রিত হইয়াছে, তাহাতে তিনটী স্তর দৃষ্ট হয়। প্রথম স্তবে তিনি সত্যানুসন্ধিৎসু জ্ঞানার্থী ; দ্বিতীয় স্তরে তথা-কথিত জ্ঞানীদিগোব পরীক্ষক, সমালোচক, ভ্ৰমপ্ৰদশক, ‘মোহমুদাগর’ ; তৃতীয় স্তরে যুবকগণের উপদেষ্টা ও হিতৈষী সুহৃৎ। সোক্রেটসের এই অভিনব জীবনধারাব আলোচনায় প্ৰবৃত্ত হইলেই ইহার তিনটী লক্ষণ বিশেষভাবে আমাদিগের দৃষ্টি আকর্ষণ কবে । প্ৰথমতঃ, তিনি সুদীর্ঘকাল অনন্যকৰ্ম্ম হইয়া জনসাধারণেব সহিত তত্ত্বালোচনায় নিযুক্ত ছিলেন, এবং এজন্য তিনি প্ৰসন্নচিত্তে অশেষ প্ৰকার দারিদ্র্যের ও অভাবেব মধ্যে বাস করিয়া গিয়াছেন । দ্বিতীয়তঃ, তিনি বিশ্বাস করিতেন, যে তিনি জীবনের ছোট বড় সকল কাৰ্য্যেই দৈবদেশ শুনিতে পান। এই আদেশ বা ইঙ্গিত বা বাণী ইতিহাসে সোক্রোটসের উপদেবতা ( Daemon ) নামে আখ্যাত হইয়া থাকে। তৃতীয়তঃ, জ্ঞানের রাজ্যে আলোচ্য বিষয় ও আলোচনার প্রণালী, উভয় সম্বন্ধেই তঁহার প্রতিভা একেবারে মৌলিক ছিল ; সত্যানুসন্ধানে বুভুক্ষার উদ্দীপন ও বিচার শক্তির উন্মেষ সাধন-এই দুই বিষয়ে তাহার সমকক্ষ কেহই আজ পৰ্যন্ত জন্ম গ্ৰহণ করে নাই। একে একে তাহার এই তিনটী বিশেষত্ব আলোচিত হইতেছে।