বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সোক্রাটীস (দ্বিতীয় খণ্ড) - রজনীকান্ত গুহ.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় সফিষ্টগণ “riferië” ( Sophistċis ) qorti “r-RPT” ( sophos ) vereir, “saħ” শব্দ হইতে বুৎপন্ন হইয়াছে; সুতরাং প্রথমে উহা ভাল অর্থেই ব্যবহৃত হইত। কবি, দার্শনিক, কলাবিৎ-যিনি যে ক্ষেত্রে অসামান্য কৃতিত্ব প্ৰদৰ্শন করিতেন, তিনিই “সফিষ্ট” বা “জ্ঞানী” বলিয়া অভিহিত হইতেন। ক্রমে পঞ্চম শতাব্দীতে উহা একটা নিন্দাসূচক বাক্যে পরিণত হইল ; তাহার কয়েকট কারণ নির্দেশ করা যাইতেছে। প্রথমতঃ, সফিষ্টেরা বিশ্বতত্ত্বের আলোচনা করিতেন ; প্ৰাচীনতন্ত্রের রক্ষণশীল লোকেরা তাহা পছন্দ করিতেন না ; কেন না, জ্ঞানের রাজ্যে যে মানুষের পক্ষে বর্জনীয় কিছুই নাই, তাহারা ইহা মানিতেন না। তৎপরে, কেহ কোনও প্রকার শ্রমসাধ্য কৰ্ম্ম, বিশেষতঃ জ্ঞানদান করিয়া অর্থে পার্জন করিলে গ্ৰীকেরা তাহাকে বড়ই অশ্রদ্ধা করিত ; সফিষ্টের শিক্ষা বিতরণ করিয়া জীবিকা নিৰ্বাহ করিতেন ; এজন্য র্তাহারা জনসমাজের বিরাগভাজন ছিলেন । তৃতীয়তঃ, অনেকের এমন সাধ্য ছিল না, যে উপযুক্ত বেতন দিয়া ইহাদিগের নিকটে শিক্ষালাভ করে । যাহারা শিক্ষায় বঞ্চিত থাকিত, তাহারা বিচারালয়ে, রাজকাৰ্য্যে ও অন্যান্য স্থলে পদে পদে অসুবিধা ভোগ করিত ; কাজেই তাহারা সফিষ্টদিগকে দেখিতে পারিত না। পরিশেষে, সফিষ্টদিগের যে অপবাদ ও অখ্যাতি আজিও ইতিহাসের পত্রে পত্রে দুরপনেয় হইয়া রহিয়াছে, প্লেটোর অমর তুলিকার অপরূপ চিত্রাঙ্কনই তাহার প্রধান কারণ। তাহার অজস্ৰ, সরস পরিহাসের ফলেই এখন “সফিষ্ট” বলিতে লোকে কুতর্কিক, জ্ঞানাভিমানী, পণ্ডিতমন্যমান, বাক্যবিশারদ প্রভৃতি বুঝিয়া থাকে। তবে এস্থলে বলা উচিত যে, স্বয়ং প্লেটাে, তাহার গুরু সোক্রেটীস ও শিষ্য আরিষ্টটল, এমন কি মহর্ষি ঈশা পৰ্য্যন্ত কাহারও না কাহারও কৃপায় “সফিষ্ট” আখ্যা প্ৰাপ্ত হইয়াছেন।